হায়দরাবাদ কান্ডঃ এফআইআর নিতে গড়িমসি, বরখাস্ত তিন পুলিশ আধিকারিক

হায়দরাবাদে তরুণী পশু চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এফআইআর নিতে গড়িমসির জেরে বরখাস্ত করা হল তিন পুলিশ আধিকারিককে। ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ, বুধবার রাতে ওই চিকিৎসক নিখোঁজ হওয়ার পরই তাঁরা থানায় যান অভিযোগ জানাতে। কিন্তু, পুলিশ তাঁদের অভিযোগ না নিয়ে, এক থানা থেকে অন্য থানা দৌড় করিয়েছিল। ওই এলাকাটি কোন থানার অধীনে পড়বে, তা ঠিক করতেই প্রচুর সময় চলে গিয়েছে পুলিশের। পরিবারের আক্ষেপ, পুলিশের গাফিলতি না থাকলে হয়তো বাঁচানো যেত বাড়ির মেয়েকে।
পুলিশ কমিশনার জানান, মৃতার বাড়ির লোকেরা যে অভিযোগ তুলেছিলেন তা বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হয়েছে। তরুণীর নিরুদ্দেশ হওয়ার এফআইআর নিতে সত্যিই দেরি করেছিল পুলিশ। সেই কারণেই তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সাসপেনশনেই থাকতে হবে এসআই এম রবি কুমার এবং হেড কনস্টেবল পি ভেনুগোপাল রেড্ডি ও এ সত্যনারায়ণ গৌড়কে। কমিশনারের কথায়, “সাইবেরাবাদ পুলিশকে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঘটনা কোন থানায় আওতায় পড়ে না ভেবে যে কোনওরকম গুরুতর অভিযোগ এলে আর এফআইআর নিতে হবে।”
এদিকে, তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধনগর থানার মধ্যে বসেই এই নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচারপতির অনুপস্থিতিতে থানায় বসেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় ম্যাজিস্ট্রেটকে। তাছাড়া থানার বাইরে লাগাতার বিক্ষোভ চলায় অভিযুক্তকে বের করার ঝুঁকিও নেওয়া হয়নি।
ইতিমধ্যেই মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তমিলিসাই সুন্দরাজন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে প্রতিদিন ট্রায়ালের মাধ্যমে দ্রুত মামলায় সুবিচারের ব্যবস্থা করা হবে। পুলিশকে দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে তেলেঙ্গানার সাধনগরের সামশাবাদের কাছে ধর্ষণ করে খুন করা হয় এক পশু চিকিৎসককে। বছর ছাব্বিশের ওই তরুণী চিকিৎসক হায়দরবাদের কাছে সামশাবাদের টোলপ্লাজায় নিজের স্কুটিটি রাখেন। সেখান থেকে কাছেই একজন ত্বকের চিকিৎসকের কাছে যান। রাত নটার সময় টোলপ্লাজার কাছে পৌঁছান তিনি। তাঁর স্কুটির একটি চাকা ফুটো হয়ে গিয়েছে। ঠিক ততক্ষণ তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ ছিল ওই তরুণীর বোনের। তিনি শেষবার ফোনে ভয় লাগছে বলে জানান বোনকে। তারপর থেকে ফোন সুইচড অফ হয়ে যায় ওই চিকিৎসকের। পরেরদিন সাধনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি ব্রিজের নিচে তরুণীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর গলার হারের লকেট দেখে চিকিৎসকের দেহ শনাক্ত করেন পরিজনেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.