চরম আর্থিক সঙ্কটে ভাটপাড়ার শহিদ রঞ্জিতের পরিবার। ঝন্টু শেখের স্ত্রীর মতো চাকরির প্রার্থনা করছেন রঞ্জিতের স্ত্রী কৌশল্যাও। এ যেন একই কাজে পৃথক ফলের মতোই ঘটনা।
কাশ্মীরের পুলওয়ামায় শহিদ সেনা জওয়ান ঝন্টু শেখের মৃত্যুর পর তার পরিবার পেয়েছে চাকরি, কিন্তু সেনা জওয়ান শহিদ রঞ্জিত যাদবের পরিবার এখনো পায়নি কোনো সরকারি চাকরি। ফলে চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে এই পরিবার।
২০২৩ সালে ৬ জুন ভাটপাড়া পৌরসভার অন্তর্গত শুগিয়াপাড়ার ১৪ নম্বর গলির বাসিন্দা রঞ্জিত যাদব মণিপুরে জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন। এরপর থেকেই চরম আর্থিক সংকটে দিন কাটছে তাঁর পরিবারের। মা- বাবা, স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই বোনকে নিয়ে সংসার ছিল শহিদ রঞ্জিত যাদবের। তারমধ্যে এক প্রতিবন্ধী বোনও আছে রঞ্জিতের। শহিদ বিএসএফ জওয়ান রঞ্জিত যাদবের অবসর ভাতাই এখন একমাত্র সম্বল গোটা যাদব পরিবারের। যে কটা টাকা পান তা দিয়ে অতি কষ্টে দিন গুজরান করতে হচ্ছে এই শহিদ পরিবারকে। তবে শহিদ রঞ্জিতের স্ত্রী কৌশল্যা যাদব এবং মা ভারতী যাদবের একটাই দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ঝন্টু আলি শেখের স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছে, সেইরকম যদি তাকে একটা চাকরি দেয় তাহলে বেঁচে যাবে তাদের পরিবারটা।
রাজ্য সরকার যাতে তাকেও সাহায্য করে তার জন্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কাছেও গিয়েছিলেন শহিদ রঞ্জিতের স্ত্রী। কিন্তু মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় আর সাক্ষাৎ হয়নি তাঁর সাথে। তবে মুখ্যমন্ত্রী যদি তাদের পাশে দাঁড়ান তাহলে বেঁচে যাবে গোটা পরিবার এমনটাই দাবি করছেন রঞ্জিতের স্ত্রী। তার দাবি, রঞ্জিত যাদব ছিলেন এই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তার মৃত্যুর ফলে সমস্ত সংসারের দায়িত্ব এসেছে তাঁর স্ত্রী কৌশল্যার কাঁধে। কিন্তু কৌশল্যাদেবী যে ভাতা পান তাতে তার ছেলে আয়ুষের পড়াশোনা চালিয়ে এতোগুলি মানুষের পেটের ভাত যোগাড় করা দিনে দিনে অসম্ভব হয়ে পড়ছে। দিন যত যাচ্ছে ছেলের পড়াশোনার খরচ বেড়ে যাচ্ছে যেটা একা তাঁর স্বামীর পেনশনের অর্থে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই রাজ্য সরকার নদিয়ার বাসিন্দা সেনা জওয়ান শহিদ ঝন্টু শেখের মৃত্যুর পর তার স্ত্রীকে যে চাকরি দিয়েছে তাকেও যেন রাজ্য সরকার একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে খুব উপকৃত হবেন তাদের পরিবারের সকলে।
অপর দিকে রঞ্জিতের একমাত্র ছেলেও বর্তমানে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করলেও সেও তাদের সংসারে হাল ফেরানোর জন্য সরকারের কাছে তার মাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আবেদন করছেন। যাতে তার পড়াশোনা থেমে না যায়। কারণ সে বড় হয়ে আই পি এস অফিসার হতে চায়।