প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় জ্বালানির দূষণে : সমীক্ষা

দূষণ বাড়ছে। সমীক্ষা বলছে জ্বালানি থেকে যে দূষণ ছড়াচ্ছে তাতে গোটা বিশ্বে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে মৃত্যু হয় একজনের। কয়লা, ডিজেল, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জ্বালানিতে মৃত্যু বাড়ছে বলে জানিয়েছে ওই সমীক্ষা। এনভায়োরনমেন্টাল রিসার্চ জার্নালে মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে কঠিন রোগ বা দুর্ঘটনাজনিত কারণ নয়। মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে জ্বালানির দূষণ।

চিনের একাংশ, ভারত, ইউরোপ ও আমেরিকার উত্তর পূর্বের দেশগুলিতে এই সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সমীক্ষা বলছে প্রতিবছর ৮.৭ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয় জ্বালানি পোড়ানোর ফলে। সমীক্ষায় প্রকাশ এই প্রতিটি অকালমৃত্যু। ২০১৭ সালের একটি রিপোর্ট বলছে বাইরে যাঁরা নিয়মিত বেরোন তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে জ্বালানির দূষণ সম্পর্কিত। মাঠে কড় বিচালি পোড়ানো থেকে শুরু করে দাবানল- সব কিছুই বাড়াচ্ছে দূষণ। ২০১৭ সালে এই ধরণের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪.২ মিলিয়ন।

শুধু ভারতেই জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য মারা গিয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। গোটা বিশ্বের তুলনায় সেই সংখ্যার গড় ৩০ শতাংশ। লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের অ্যাটমোস্ফেরিক কেমিস্ট্রির গবেষক ইলয়েস মেরাইস জানান যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে জ্বালানির দূষণ। সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যে ধাক্কা দিচ্ছে এই সমস্যা।

এই প্রেক্ষিতে প্রকাশিত একটি উপগ্রহ চিত্র জানিয়েছিল দাবানল ও জীবাশ্ম জ্বালানির ফলে যে ধূলিকণা উৎপাদন হচ্ছে, তা সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করে। এর থেকে তৈরি হচ্ছে ক্ষতিকারক পার্টিকলস। এই পার্টিকলসই শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করছে। যা মৃত্যু ঘটাচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষের।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোয়েল শয়ারজ জানাচ্ছেন ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যা ধূলিকণার পরিমাণ ছিল, তার থেকে অনেকটাই বেড়েছে ২০১৯ সালে। প্রতি বছরই ধীরে ধীরে বাড়ছে এই পরিমাণ, ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, ফুসফুসের নানা রোগের মুখোমুখি হচ্ছে মানব সভ্যতা।

গবেষকদের পরামর্শ, যদি এখনই এর কোনও বিকল্প খুঁজে না পাওয়া যায় ও তার ব্যবহার শুরু না হয়, তবে সমস্যা মারণ হয়ে উঠবে। কারণ যা মনে করা হয়েছিল, তার থেকে দ্বিগুণ ক্ষতি করছে জ্বালানির দূষণ। ভারতে এই ধরণের জ্বালানি দূষণের ফলে মৃত্যুতে সবার ওপরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, তারপর বিহার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.