৬৭% ভারতীয়ের শরীরে তৈরি হয়েছে অ্যান্টিবডি, ৪০ কোটি এখনও ঝুঁকিতে: স্বাস্থ্যমন্ত্রক

দেশের বিপুল জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশের শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দেশের সাম্প্রতিক সেরো সার্ভের রিপোর্ট বলছে, কমবয়সী, শিশু, প্রবীণ সহ প্রায় ৬৭ শতাংশের শরীরে কোভিড প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। তবে এখনও ৪০ কোটি মানুষের বিপদ কাটেনি। এর মধ্যে কোভিডের হাই-রিস্ক গ্রুপেও আছেন অনেকে।

কোভিড সংক্রমণ কোন কোন এলাকায় কেমন ছড়িয়েছে এবং কোথাও হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে কিনা তা জানতে, দেশজুড়েই সেরো সার্ভে করছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।সেরো সার্ভে হল অ্যান্টিবডি টেস্ট। রক্তের নমুনা নিয়ে যদি দেখা যায় তার মধ্যে অ্যান্টিবডি আছে তাহলে বুঝতে হবে ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল। কারণ ভাইরাস শরীরে ঢুকলেই তার প্রতিরোধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আইসিএমআর জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই দেশের দুই তৃতীয়াংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। সার্ভের রিপোর্ট আরও জানাচ্ছে, ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিল এবং তাদের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।


আইসিএমআরের রিপোর্ট বলছে, সবচেয়ে বেশি কোভিডের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে মাঝবয়সী ও প্রবীণদের শরীরে। ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের ৭৭ শতাংশের শরীরেই ভাইরাসের অ্যান্টিবডি রয়েছে, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৭৬ শতাংশের রক্তে মিলেছে অ্যান্টিবডি আর ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের ৬৬ শতাংশের শরীরে মিলেছে কোভিড প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি।


সিম্পটোমেটিক বা উপসর্গ আছে এমন রোগীর সংখ্যা কম, তিন শতাংশের কাছাকাছি। বলছে সেরো সার্ভের রিপোর্ট। বেশিরভাগেরই রোগের লক্ষণ বোঝা যায়নি। আইসিএমআর বলছে, উপসর্গহীন রোগীদের থেকেই সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে। গত বছর অগস্টের রিপোর্ট বলছে, দশ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রতি ১৫ জনের মধ্যে একজন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিল। মে থেকে অগস্টের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর হার প্রায় দশ গুণ বেড়ে গিয়েছিল।

দেশে অধিকাংশ করোনা রোগীকে চিহ্নিত করা যায়নি এমন রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল নানা সূত্র থেকে। বলা হয়েছিল, কোভিড টেস্ট ঠিকমতো না হওয়ায় ৩৮ লাখের বেশি রোগীকে শনাক্ত করাই যায়নি। বিহার, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্রের মতো কয়েকটি রাজ্যে লাখের বেশি কোভিড রোগীকে শনাক্ত করাই যায়নি। পরে কয়েকটি রাজ্যের সংশোধিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, কোভিডে মৃত্যু যত দেখানো হয়েছিল, আসল সংখ্যাটা ছিল তার থেকে অনেক বেশি। তবে আইসিএমআর জানাচ্ছে, এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে। যত বেশি মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যাবে, ততটাই দ্রুত হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে, সংক্রমণের গ্রাফও নীচের দিকে নামবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.