‘আপনাদের রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্ত নয়’, হাওয়ালা জৈন প্রসঙ্গে মমতাকে জবাব ধনকড়ের

হাওয়ালা জৈন মামলায় এখনও পর্যন্ত কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়নি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের জবাবে এদিন এমনটাই জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেই সঙ্গে এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের পর সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করা উচিত ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

হাওয়ালা জৈন মামলায় অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধেই চার্জশিট আনা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কখনওই চার্জশিট আনা হয়নি, জানিয়েছেন রাজ্যপাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদের মুখে এমন ‘সোজাসাপ্টা অসত্য’ দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।


রাজভবনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত মিডিয়ার উদ্দেশে এদিন রাজ্যপাল বলেন, ‘আপনারা একটাও প্রশ্ন করলেন না! হাওয়ালা জৈন মামলায় কাঁদের নাম ছিল আপনারা তো সেটা জানেন।’

আগামী শুক্রবার তৃতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রথম বাজেট অধিবেশন শুরু। নিয়মানুযায়ী সেই অধিবেশন শুরু হবে রাজ্যপালের বক্তৃতা দিয়ে। তার খসড়া পাওয়ার পর রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বলে জানিয়েছেন। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর আজকের সাংবাদিক বৈঠকের মিনিট দশেক আগেই নাকি তাঁদের মধ্যে ফোনে কথাও হয়।

উত্তরবঙ্গে গিয়ে এমন পরিস্থিতি দেখে এসেছেন রাজ্যপাল তা অবর্ণনীয়, এবং কল্পনাতীত, জানিয়েছেন জগদীপ ধনকড়। সেখানে গণতন্ত্রের হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচনও হয়নি। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের আগেই জিটিএ-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যপাল।

তারপরেই এদিন নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্ত। আমি দুঃখিত কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি। হাওয়ালা জৈন মামলার চার্জশিটে ওঁর নাম ছিল।

হাওয়ালা মামলার চার্জশিটে অজিত পাঁজা, যশোবন্ত সিনহার মতো নেতাদের নামও ছিল, এদিন জানিয়েছেন ধনকড়। যদিও তাঁরা সকলেই মুক্তি পেয়েছেন।

রাজ্যপাল বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের প্রথম নাগরিক হিসেবে আমি কারও সামনে মাথা নোয়াবো না। শুধু ভারতীয় সংবিধানের সামনেই আমার মাথা নত হবে। রাজ্যপাল হিসেবে এটাই আমার কাজ যে কখনও কোনও কিছু নিয়ে আশঙ্কা হলে সেদিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’

এদেশে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে সব অভিযোগ রয়েছে হাওয়ালা কাণ্ড তার অন্যতম। জৈন ভাইয়ের হাত ধরে দেশের প্রথমসারির নেতাদের কাছে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পৌঁছে যেত বলে অভিযোগ ওঠে। ১৯৯৬ সালে ওই কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে আসতে তাতে বিজেপির লালকৃষ্ণ আডবাণী, মদললাল খুরানা, কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা বলরাম জাখর, মাধবরাও সিন্ধিয়া, এনডি তেওয়ারি, জনতা পার্টির শরদ যাদব প্রমুখের নাম জড়ায়। লালকৃষ্ণ আডবাণী অনন্য নজির গড়েন সাংসদ পদ ছেড়ে দিয়ে। তিনি ঘোষণা করেন, নিষ্কলঙ্ক ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত সংসদে ফিরবেন না। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.