সুস্থ হওয়ার ১০২ দিন পর ফের কোভিড সংক্রমণের সম্ভাবনা, চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষণায়

সেরে উঠেও নিস্তার নেই। একই ভাইরাসে কাবু দু’বার। বাংলায় করোনা সংক্রমণ গগনচুম্বী। শেষ তিনদিন গড়ে সাত হাজার করে মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সাড়ে তিনশো এমন রোগী রয়েছেন যাঁরা গতবছরও করোনায় (Corona Virus) আক্রান্ত হয়েছিলেন! অন্তত গবেষণার দাবি তেমনটাই।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ ইতিমধ্যেই তাদের গবেষণা প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সাড়ে চার থেকে পাঁচ শতাংশ নতুন করোনা সংক্রমণই ‘রিইনফেকশন’ বা পুনঃসংক্রমণ। অর্থাৎ ভাইরাস এঁদের পরপর দু’বার আক্রমণ করেছে। পুনঃসংক্রমণ বা রিইনফেকশনের সংজ্ঞা জানতে ১৩০০ ব্যক্তির উপর একটি গবেষণা চালায় আইসিএমআর (ICMR)। সেই গবেষণা লব্ধ ফল থেকেই দেখা গিয়েছে, প্রতি ১০০ জন নতুন সংক্রমিতের মধ্যে জনা পাঁচেকের আগেও একবার করোনা হয়েছিল। এমন তথ্যে দিশেহারা করোনাজয়ীরা। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলায় মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৬৩। এর মধ্যে অনেকেই ভেবেছিলেন, শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। আর করোনা হবে না। কিন্তু সে ধারণাকে দশ গোল দিচ্ছে বাস্তব তথ্য।


ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিজের প্রধান ডা. সমীরণ পাণ্ডার কথায়, শরীর কোনও অঙ্ক মেনে চলে না। একবার করোনা থেকে সেরে ওঠার পর অনেকে ভাবছেন টানা একবছর আমার আর করোনা হবে না। এমনটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। ব্যক্তিবিশেষের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন।

প্রশ্ন উঠছে, একবার করোনা আক্রান্ত (Corona Positive) হয়ে সেরে ওঠার পর ফের সংক্রমণ হতে পারে? সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই সময়সীমা তিনমাস ১০ দিনের একটু বেশি। ডা. সমীরণ পাণ্ডার কথায়, একবার করোনা আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার পর ১০২ দিন পর্যন্ত রোগী নিরাপদ। ১০২ দিন পর ফের তিনি করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। তবে পুনঃসংক্রমণ কি না তা নিশ্চিত হতে কিছু শর্ত রয়েছে চিকিৎসকদের।

ডা. সমীরণ পাণ্ডার কথায়, পজিটিভ-নেগেটিভ-পজিটিভ এই পর্যায়ক্রমে কেউ যদি আক্রান্ত হন তবে সেটা পুনঃসংক্রমণ। অর্থাৎ প্রথমবার একজন পজিটিভ হলেন। তারপর একবার তাঁকে নেগেটিভ হতে হবে। যদি কেউ টানা পজিটিভ থাকেন তাহলে সেটা পুনঃসংক্রমণ নয়। ভাইরাল লোড বেশি থাকলে অনেক সময় দীর্ঘদিন কোভিড পজিটিভ থাকার প্রবণতা দেখা যায়। কোভিড থেকে সেরে উঠলেও বিধিনিষেধ পালনে ঢিলেমি দিতে বারণ করছেন চিকিৎসকরা। নিয়মিত মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার মতো বিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন ডা. পাণ্ডা। তাঁর কথায়, পুনঃসংক্রমণের সংখ্যাটা ৫ শতাংশের থেকেও অনেকটা বেশি হতে পারে। কারণ গবেষণায় ২২ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ৭ অক্টোবর ২০২০’র তথ্য নেওয়া হয়েছে। ২০২১-এর এপ্রিলে সংক্রমণ যেভাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে তাতে পুনঃসংক্রমণের সংখ্যাটা আরও বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.