ভোট পরবর্তী হিংসায় মমতাময়ীর মমতাময় স্নেহছায়ায় লুঙ্গিবাহিনীর নখ দাঁত বাংলার হিন্দুকে আরো সংগঠিত করবে, বিজেপি আরো শক্তিশালী হবে

বিধানসভা নির্বাচন শেষ। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক মিনিট সময় নষ্ট না করে মিথ্যা প্রচারে নেমেছেন বাংলার মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবীর দল। সংবাদপত্রের পাতায় পাতায় ধর্মনিরপেক্ষতার জয়ধ্বনি। সংবাদ পরিবেশনকারী চ্যানেলের পর্দায় চলছে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে রুখে দেওয়ার উল্লাস। নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসে বাংলার বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বাড়িছাড়া। মানবিক অধিকার রক্ষার মৌরুসি পাট্টা যাদের হাতে টিভির পর্দায় তারা এখন অদৃশ্যমান। আলোচ্য বিষয় এখন দুটি। কিভাবে কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থ মোদী আর বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে কিভাবে রুখে দিলেন বাংলার মানুষ। এবারের ভোটে বাংলার ভোটারকুল নাকি তাদের ধর্মবিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠে ভোটদান করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারীরা ভীষণ উল্লসিত এবং উত্তেজিত। চুরি, দুর্নীতি, কাটমানি, বেকারী, পঞ্চায়েত-পৌরসভা ভোটে ভোট দিতে না দেওয়া এসব আর কোনো ইস্যু ই নয়। বহিরাগত বিজেপি বনাম বাংলার বাঙালি – এটাই নাকি একমাত্র বিবেচ্য বিষয়।

এবারে দেখা যাক এই প্রচারণার কতটা সত্যি আর কতটাই বা মিথ্যা। এবারের ভোটে এক কোটি তেত্রিশ লক্ষ ভোটার ভোট দেননি। ভোট দিয়েছেন কমবেশি ছয় কোটি মানুষ। এর ভিতর চার কোটি আটত্রিশ লক্ষ ভোটার হিন্দু আর এক কোটি বাষট্টি লক্ষ ভোটার মুসলমান। বাংলার বুদ্ধিজীবীদের হিসাব অনুযায়ী যে দুই কোটি আঠাশ লক্ষ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন তারা সাম্প্রদায়িক, বাকিরা ধোয়া তুলসিপাতা ও কাঠ ধর্মনিরপেক্ষ। আমরা যারা বিজেপিকে ভোট দিই বা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত তারা না হয় মোদী-শাহ জুটিকে বহিরাগত ভাবিনা বলে সাম্প্রদায়িক, জয় শ্রীরাম শুনলে কষ্ট পাইনা বলে সাম্প্রদায়িক, আর.এস.এস. কে সাম্প্রদায়িক সংগঠন বলে মানিনা বলে সাম্প্রদায়িক, কিন্তু বাংলার কাঠমোল্লার দল, লুঙ্গি বাহিনী অসাম্প্রদায়িক হল কিভাবে?
বাংলার এক কোটি বাষট্টি লক্ষ মুসলিম কোন আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিল শুনি?
এরা শুধুমাত্র বিজেপিকে হারাবেন বলেই এক কাট্টা হয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। এই ভোট দেওয়ার সময় তাদের মধ্যে কাজ করেছে উগ্র বিজেপি বিরোধিতা বা হিন্দু বিরোধিতা। তাই চৌত্রিশ বছর ধরে চোখের মণির মতন তাদের রক্ষা করেছে যে বামফ্রন্ট তাদের তারা শূন্য করেছেন। শূন্য করেছেন মুর্শিদাবাদ, মালদহে তাদের রক্ষাকারী কংগ্রেস দলকে। ফুরফুরা শরীফের পীরজাদাকেও তারা এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেননি। তাই বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়েছে আর তৃণমূল সরকার গড়েছে। বাকিদের হাতে ফুটো বাটি।
ছয় লক্ষ ভোটারের মধ্যে চার লক্ষ ভোটার যখন আপন আপন সমাজ ও গোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে ভোটদান করেন তখন এই বুদ্ধিজীবীর দল মিথ্যা প্রচারে নামেন কেন? কোন স্বার্থে কিসের বিনিময়ে এরা গোয়েবলসের মৃত আত্মাকে নিজেদের শরীরে স্থান দেন? কি ভাবছেন? বিজেপিকে রুখবেন? পারবেন না। আগামীদিনে মেরুকরণ আরো জোরালো হবে। বাংলার রাজনীতিকে মানুষ চতুর্মুখী থেকে এবারে দ্বিমুখী করে দিয়েছেন। ভোট পরবর্তী হিংসায় মমতাময়ীর মমতাময় স্নেহছায়ায় লুঙ্গিবাহিনীর নখ দাঁত বাংলার হিন্দুকে আরো সংগঠিত করবে। বিজেপি আরো শক্তিশালী হবে। বুদ্ধিজীবীরা রসাতলে যাবেন।

ভূমিপুত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.