রাত পোহালেই দ্বিতীয় দফার লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এমন এক বিধানসভা কেন্দ্রের কথা জানা গেল, যার অস্তিত্বই নেই দেশের মানচিত্রে! নেই সে জায়গার সীমারেখাও। অথচ নয়-নয় করে এ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা প্রায় তিন হাজার!
এ যেন অনেকটা ছায়ার মতো। থেকেও নেই। কিন্তু বাস্তবে দিব্যি রয়েছে সিকিমের এই বিধানসভা কেন্দ্র। আসলে, সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ৩২টি বৌদ্ধ সংঘ। সেই সব ক’টি সংঘ মিলিয়েই মানচিত্রের বাইরের এই বিধানসভা কেন্দ্র। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই রাজ্যের সেই সব সংঘবাসীরাই নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।
কিন্তু কী ভাবে সম্ভব এমনটা? একটি বিধানসভা কেন্দ্রের কোনও সীমানা নেই! মানচিত্রে কোনও উল্লেখ নেই!
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন, আসলে এই কেন্দ্রটি বৌদ্ধ সংঘ বা মঠের সন্ন্যাসীদের জন্যই বিশেষ ভাবে বরাদ্দ। সাধারণ মানুষের সাধারণ ভোট-পর্বের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এর। সিকিমের মঠের রেকর্ডে যাঁদের নাম উল্লেখ রয়েছে, শুধু তাঁরাই ভোট দিতে পারেন।
তবে শুধু ভোট দেওয়াই নয়, তাঁদের মধ্যে থেকেই যে কেউ ভোটে লড়তে পারেন। সংঘের স্বতন্ত্র পরিচয় অক্ষুণ্ণ রাখতেই এই নিয়ম। এই বছর সমস্ত সংঘের সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনী মিলিয়ে মোট ২৮৮১ জন ভোটার রয়েছেন বলে কমিশনের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
আজ, বৃহস্পতিবার সিকিমে ভোট। এক দফাতেই ভোট হবে এখানে। লোকসভার পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে এ দিনই। তবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনটি কিন্তু অনেকটাই অন্য রকম। সকাল সকাল প্রার্থনা সেরে তাঁরা তৈরি হন ৩২ টি সংঘ থেকে এক জন প্রতিনিধিকে বেছে নিতে।
তাঁদের ভোটের জন্য ইভিএম মেশিনও আলাদা করে তৈরি করা হয়। কারণ তাঁদের প্রার্থী তালিকার সঙ্গে অন্যান্য প্রার্থী তালিকার মিল থাকে না।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী তথা এসডিএফ প্রধান পবন কুমার চামলিং ১৯৯৪ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। টানা অষ্টম বার তিনি জয়ী হন কি না, সে দিকেই তাকিয়ে ছোট্ট এই রাজ্যটি।