হানাদারদের নৃশংসতা ও অত্যাচারের মুখে প্রাণের ভয়ে খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, ফরিদপুর, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, শরণখোলা, মংলা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, চালনার লাখ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষের উদ্দেশ্য তখন খুলনার ডুমুরিয়া হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পৌঁছানো। উদ্দেশ্য একটাই ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া।

ভারতীয় সীমান্তে পাড়ি জমাতে হলে ডুমুরিয়া পর্যন্ত ভদ্রা নদী দিয়ে নৌকায় আসা ছিলো অপেক্ষাকৃত অনেকটাই সহজ । কারণ এরপর সাতক্ষীরা হয়ে ভারতীয় সীমান্ত। কারণ এদিকে নদীপথে যাতায়াতের সুবিধা, অনেকটা নিরুত্তাপ। এখানে হানাদার বাহিনীর আনাগোনা নেই বললেই চলে। আটলিয়া ইউনিয়নের চুকনগরের চারপাশ তখন নিচু এলাকা। কেবল চুকনগর বাজারটা তখন খানিকটা উঁচু।

এপ্রিল ও মে মাসে দক্ষিণাঞ্চল হিন্দুদের উপর পাকিস্তানি হানাদারদের নির্যাতন ও গণহত্যা চরম পর্যায়ে পৌঁছালো। হিন্দু নরনারীদের বসবাস তখন যেন জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরিতে। দক্ষিণাঞ্চলের নানা প্রান্ত থেকে আসা শরণার্থী হয়ে পাড়ি জমানো মানুষের ঢল তখন চুকনগর হয়ে সীমান্ত মুখী। চুকনগর বাজার তাই বেশ পরিচিত। তিন দিক থেকে নদী ঘেরা চুকনগর বাজার। ভদ্রা নদী দিয়ে নৌকা করে আসা মানুষের একমাত্র বিশ্রামস্থল এই বাজার। কারণ এরপর একটানা বিরামহীনভাবে চলে সীমান্তের দিকে। চুকনগর বাজারে এলে মানুষ নৌকা থেকে নেমে রান্নাবান্না করে, শেষ সদাইটুকু করে নেয়, কেউবা জিরিয়ে নেয়। অতঃপর সীমান্তের দিকে যাত্রা। মে মাসের আগ পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় প্রত্যাশী শরণার্থীদের ভিড় অবশ্য কম ছিল। এদিকে এই পথের সুবিধার কথা ভেবে ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে লাগলো। কিন্তু ১৮ এবং ১৯ মে যেন জনস্রোতের সব সীমা ছাড়িয়ে গেল। হাজারে হাজারে মানুষ আসছে, চুকনগরের আশপাশে তখন মানুষের স্রোত যেন মেলার মতো। মানুষ আসছে, খানিক বিশ্রাম নিয়ে কিংবা রাত কাটিয়ে চলে যাচ্ছে সীমান্তের দিকে। পাকিস্তানি হানাদারদের এখানে চিহ্ন মাত্রও নেই। ওরা তখন জানে না এখানে এতো মানুষের ঢল নেমেছে।

তখন আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন গোলাম হোসেন। শান্তি বাহিনীর সদস্য চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন ও ভদ্রা নদীর খেয়া ঘাটের ইজারাদার শামসুদ্দিন খাঁ নামের এক বিহারী ১৯ মে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা ক্যাম্পে যোগাযোগ করে বললেন, চুকনগর বাজারের বর্তমান অবস্থার কথা। হিন্দুদের ঢল নেমেছে চুকনগরে। পাকিস্তানি ক্যাম্পে যোগাযোগ করার পরে হানাদারেরা খবর পেয়ে একটি ট্রাক ও একটি জিপে করে সেনা পাঠায়। এর আগে ১৯ মে অর্ধ লক্ষের বেশি মানুষ চুকনগরের পাতখোলা বিল, চুকনগরের কাঁচাবাজার, মাছবাজার, কাপুড়িয়া পট্টি, গরুহাটা বাজারের কালী মন্দির, বটতলাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। তখনো মানুষ কেবলই আসছিল নানা প্রান্ত থেকে। উদ্দেশ্য এখানে রাত কাটিয়ে পরদিন সকালেই সীমান্তের উদ্দেশ্যে যাত্রা। এসময় মানুষের ভিড়ে চারদিক গমগম করছিল। কেউ রান্না করছে, কেউ সওদাপাতি কিনছে, কেউ সঙ্গে আনা পলিথিনের আস্তরণ দিয়ে তাঁবু বানিয়ে নিচে অবস্থান নিয়েছেন। কেউ আশংকায় রাত্রি কাটিয়েছেন নির্ঘুম চোখে, কারণ একটা চাপা আতঙ্ক কাজ করছিল অনেকের মধ্যে।

২০ মে ১৯৭১, আজকের মতো সেদিনের দিনটিও ছিল বৃহস্পতিবার।সারা রাত হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে, নৌকায়, গরুর গাড়ি করে এসেছে চুকনগরে। উদ্দেশ্য সকালের আলো ফুটলেই রওনা দেয়া। ভোর হতেই চারপাশ জেগে উঠলো। মানুষের স্রোত তখন সীমান্তের দিকে। পায়ে হেঁটে সীমান্তের দিকে যাচ্ছে মানুষ, কেউ মালপত্র গোছাচ্ছে, কেউ রান্না চাপিয়েছে। কারো রান্না হয়ে গেছে, অনেকে রওনা দিয়ে দিয়েছে সীমান্তের উদ্দেশ্যে, অনেকে মাত্র খেতে বসেছে কেবল।

এলাকাবাসীর তথ্যমতে, ২০শে মে সকালে সাতক্ষীরার অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প হতে তিনটি ট্রাক (লরি) এবং একটি খোলা জীপে করে সেনারা চুকনগর এসে পৌঁছোয়। প্রথমে সেনাবাহী লরি থামে চুকনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে হতে এক কিলোমিটার দূরের চুকনগর টু সাতক্ষীরা রোডের ঝাউগাছ তলায়, বর্তমানে যেখানে ফুয়েল পাম্প স্টেশন হয়েছে, তার পাশে। সেখানেই গাড়ি থেকে নেমে সেনারা তিন ভাগে ভাগ হয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। একটি দল যায় মাটির রাস্তা ধরে ঘ্যাংরাইল নদীর দিকে। সামনেই খেজুরডাঙ্গিতে অগণিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। এগোলেই সামনে পড়ে মালতিয়া গ্রামের ৬৯ বছর বয়সী চিকন মোড়ল। তিনি ধান ক্ষেতে কাঁচি দিয়ে নিড়ানি দিচ্ছিলেন। পাকিস্তানী সেনাদের সাথে চিকন মোড়লের কথা হয়; দু’-এক কথার পর তা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। আচমকাই সেনারা চিকন মোড়লকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তিনি ধান ক্ষেতেই লুটিয়ে পড়েন। তিনি-ই এদিনের গণহত্যার প্রথম শহীদ। আর একটু এগোলে সেনাদের সামনে পড়ে চুকনগর বাজারের ব্যবসায়ী সুরেন কুন্ডু (৪০)। পরনে ধুতি, গায়ে গেরুয়া বসন, গলায় ছিল রুদ্রাক্ষের মালা। পাকিস্তানী সেনারা সহজেই বুঝতে পারে যে তিনি হিন্দু। তারা কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই সুরেন কুন্ডুকে গুলি করে হত্যা করে।

এরপরই সেনা দলটি নেমে পড়ে পাতাখোলা বিলে। শুরু হয় ব্রাশ ফায়ার। পাতাখোলা বিলে তখন জোয়ার, তার মধ্যেও অনেকে দৌড়োনোর চেষ্টা করেছে, সামান্য পানিতেই ডুবে থেকে কোনোপ্রকারে শ্বাস নিয়েছে। সেনারা এরপর কিছুটা চালাকির আশ্রয় নেয়, তারা দূরে থাকা মানুষদের ইশারায় কাছে ডেকে সোজা লাইন করে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয় এবং একে একে গুলি করে হত্যা করে।

সেনাদের আর একটি দল হিন্দু পাড়ায় যায়। অধিকাংশ বসতবাড়িতে হিন্দু বাসিন্দাদের পরিবর্তে আশ্রয় নিয়েছিল শরণার্থীরা। সেনারা প্রথমে নন্দীপাড়ায় প্রবেশ করে। সেখানে চুকনগর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আশুতোষ কুমার নন্দী এবং সংলগ্ন হাজরা নন্দী এবং রাখাল কবিরাজের বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

নন্দীবাড়ীর পরে তাঁতী পাড়া, সেটি পার হলেই সরদারপাড়া। স্থানীয় মানুষদের কাছে সেটি বেহারা পাড়া বলে পরিচিত। এরা সবাই মুসলমান, পাল্কী বহন করা তাদের পেশা। সেনাদের তাঁতীপাড়ায় প্রবেশ করে আগুন ও হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠতে দেখে তারাও বিপদের গন্ধ আঁচ করতে পারে। তারা ধরে নেয়, সেনারা তাদের পাড়াতেও আক্রমণ করতে পারে। এ কারণে তারা দলবদ্ধভাবে পাকিস্তানের পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকে। প্রাণ বাঁচাতে বহু শরণার্থীরাও তাদের সাথে মিলেমিশে শ্লোগান দিতে থাকে। সেনারা এলে কলেমা পড়া ও কেউ কেউ তাদের মুসলমানিত্ব প্রমাণ করার জন্যে কাপড় তুলে খতনা (লিঙ্গমুন্ডের অগ্রভাগের চামড়া ছেদন) করার প্রমাণ দেন। সেনারা তুষ্ট হয়ে ওই পাড়ার কাউকে কিছু বলে না, তবে তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্যে বিশেষভাবে হিন্দুপাড়ার পথঘাট চিনিয়ে দেয়ার স্বার্থে শেরআলী সরদার ও রতন সরদারকে সাথে নিয়ে যায়।

সেনাদের আর একটি দল শম্বুকগতিতে গাড়ি চালিয়ে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে বাজারের দিকে এগুতে থাকে। বাজারে পৌঁছাতে তাদের পনেরো থেকে বিশ মিনিট সময় লাগে। এরমধ্যে বাজারে অবস্থানরত স্থানীয় লোকজন এবং কিছু শরণার্থী পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। সেনারা সরাসরি বাজারের খেয়াঘাটে চলে আসে। অনেকেই তখন নদী পার হয়ে নিরাপদ স্থানের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। নদীতে থাকা নৌকা বহরে প্রচুর মানুষ ছিল। সেনাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকেই নদীতে লাফিয়ে পড়েন। শুরু হয় গুলিবর্ষণ। গুলির আঘাতে নৌকাগুলো সব ঝাঁঝরা হয়ে যায়। এতে নৌকার ছিদ্রপথে পানি প্রবেশ করে যাত্রীসহ নৌকাগুলো একে একে ডুবে যায়।

নদীতীরে বুড়ো বটগাছ। অনেক মানুষ সেখানেও আশ্রয় নিয়েছিল। নৌকায় করে পাকিস্তানী সেনারা এসে তাদেরও হত্যা করে। চুকনগরের মালোপাড়ার বাবুরাম বিশ্বাস সেখানে মারা পড়েন। মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের তারা টেনে-হিঁচড়ে বুট দিয়ে চেপে ধরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। নির্মম অত্যাচারের পরও অনেকেকে গুলি করে হত্যা করে। বটিয়াঘাটার গাইন পরিবারের ৯ জন সদস্য এই মন্দিরেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।বিকেল চারটে-সাড়ে চারটের সময় তিন দলে ভাগ হওয়া পাকিস্তানী সেনাদের দলটি বাজারে এক জায়গায় জড়ো হয়। অনেকেই মনে করেন, তাদের গুলির মজুত ফুরিয়ে গিয়েছিল। এ কারণে লাগাতার হত্যাকাণ্ড তারা ইতি টানে। সেনারা স্থানীয় খাঁ মিয়াকে লাশগুলো অপসারণ করে জায়গাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফেলার নির্দেশনা দিয়ে আবারও যে পথে এসেছিল, সেদিকে ফিরে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণঃ

খুলনার বটিয়াঘাটার উত্তর বাঙ্গিমারি গ্রামের বলাই গোলদার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে চুকনগর কলেজের ভিতরে আমাদের একটি মেয়ে হয়। ওদের পরিষ্কার টরিস্কার করে যখন ভারত যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে উঠিয়ে দিই তখন দক্ষিণপাশ থেকে গুলি শুরু হয়। বাসওয়ালা ওদের নামিয়ে দিয়ে বাস নিয়ে চলে যায়। তখন একটা ছত্রভঙ্গ অবস্থা হলো। কাউকে খুঁজে পেলাম না। আমি কাঁদতে লাগলাম। গুলি চললো আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। সবাইকে খুঁজে ফিরছি, কাউকে পাইনা…। সেদিনের কথা কি বলবো আর! একজনের পেটের ভুঁড়ি আরেকজনের সঙ্গে লেগে গিয়েছিল। এখানে সেখানে বহু লোক মেরেছে, ২০ হাজারের উপরে হবে।’

চুকনগর গ্রামের আনসার আলী সরদার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বলেছিলেন, ‘শুধু আমরা ৪২ জনই ২১টি বাঁশে করে লাশ ঠেলে নদীতে ফেলেছিলাম। প্রতিবার ২০০টি করে লাশ। ২১ মে ভোর থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত লাশ ফেলেছি।’

চুকনগরের কৃষক গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী আফসার আলী সরকার বলেছিলেন, ‘সকালবেলা একখানা মিলিটারি গাড়ি আসলো। আমাদের বললো লাশ ফেলানোর জন্য। এক হিন্দু বাড়ি থেকে বাঁশ নিলাম। বাঁশ নিয়ে বেশ খাটো খাটো করে এপাশ বেঁধে দুই জনে মিলে আমরা ৯টা/ ১০টার দিকে নদীতে লাশ ফেলতে শুরু করলাম। আমার সাথে ছিল আমার বেয়াই ইনসার আলী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লাশ ফেললাম। প্রথমে গুনেছি তারপর গুনিনি। অগণিত লাশ ফেললাম। রাতে বাড়ি এসে গোসল করে শুয়ে পড়লাম। সারাদিনে কম করে হলেও আমরা ৫ থেকে ৬ হাজার লাশ ফেলেছি।’

চুকনগরের পাশের গ্রাম রুস্তমপুর নিবাসী শিক্ষক সরদার মুহাম্মদ নূর আলী বর্ণনা দিয়েছিলেন চুকনগরের গণহত্যার পরবর্তী সময় নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, “সে এক করুণ নারকীয় দৃশ্য ভোলা যায় না। আমাদের এলাকায় প্রায় চার মাইল ব্যাপী এই হত্যাযজ্ঞ চলেছে। লাশগুলো কিছু নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। দুর্গন্ধ এড়াতে কিছু লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল। এলাকার লোক ২ মাস পর্যন্ত ওই নদীর মাছ খায়নি। ভয়ে লোকজন পাঁচ ছয় মাস পর্যন্ত বাজারেও আসেনি।”

চুকনগর গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ও চুকনগরের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী সরদার হামুদুর রহমান কমিশনের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ২৬ হাজারের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘২৬ হাজার মানুষ মরেছে তারা হিসেব করে, আমাদের এখানে মেরেছে তো ১০ হাজারের বেশি!

ডুমুরিয়ার মাগুরখালী ইউনিয়নের পরমাওয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা, চুকনগর গণহত্যা থেকে বেঁচে ফেরা, গণহত্যা প্রত্যক্ষদর্শী দেবাশীষ রায় বলেছিলেন, ‘আমরা আসার এক দেড় ঘণ্টা পর খান সেনারা গাড়ি করে আসে। খান সেনাদের দেখে লোকজন ভয় পেয়ে ছোটাছুটি আরম্ভ করে। বাবাসহ আমরা ছিলাম নৌকার এক সাইডে। ওরা সবাইকে লাইন দিতে বলল লাইন দেয়ার একটু পরে গুলি শুরু করলো বহু লোকজন মারা পড়লো। আনুমানিক ১০ থেকে ১১ হাজার লোককে হত্যা করেছিল। আমার বড় ভাই মেজ কাকা সেজ কাকাকে লাইনে গুলি করে মারলো। আমার মার’ও বামপাশে গুলি লাগে। বাবা আর সহ্য করতে না পেরে বললেন, “তোরা যেটা ভালো বুঝিস তাই কর। আমি আর বেঁচে থেকে কি করবো। আমার ভাই গেল, ছেলে গেল, স্ত্রীও যাওয়ার পথে।” আমরা খুব অনুরোধ করলাম। শুনলো না চলে গেল। পরে বাবাকে বেয়নেট দিয়ে হত্যা করে(অসমাপ্ত)।

আসুন আমরা সেইসমস্ত বিদেহী আত্মার শান্তিকামনা করি,যারা ২০ মে অকালে প্রাণ দিয়েছিলেন।

তথ্যসূত্রঃ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ- গৌরাঙ্গ নন্দী।

চুকনগর গণহত্যা- আহমেদ ইশতিয়াক।

সন্দীপ মুখোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.