বৃহস্পতিবার ভোট মেটার পরেই নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে রাজ্যে আরও ২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আরও বেড়ে গেল সংখ্যাটা। শুক্রবার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই ২৫ কোম্পানির পর আরও ২৬ কোম্পানি আধাসেনা পাঠানো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। অর্থাৎ, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে মোট ১৩৪ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন থাকবে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানানো হচ্ছিল। সেই দাবি মেনে নিয়েই আরও ২৬ কোম্পানি আধাসেনা পাঠাচ্ছে কমিশন।
প্রথম দফার ভোটের জন্য কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার, এই দুই রাজ্যে মোট ৮৩ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। তার মধ্যে কোচবিহারে মোতায়েন করা হয়েছিল ৪৭ কোম্পানি আধাসেনা। আলিপুরদুয়ারে মোতায়েন করা হয়েছিল ৩৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরু হতেই শাসকদল ও বিরোধীপক্ষ দু’দলের তরফেই অভিযোগ জানানো হয় কমিশনে। কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক অভিযোগ করেন, যেসব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই, সেখানে তৃণমূল কারচুপি করার চেষ্টা করেছে। অন্যদিকে কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবি ঘোষ আবার অভিযোগ করেন, বর্ডার থেকে বিএসএফ এসে অনেক বুথে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ফোন করে পুরোটা জানান তিনি। তৃণমূল ও বিজেপি দু’দলই কোচবিহারে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানায়।
ভোটের দিন সন্ধ্যায় কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক দাবি জানান, যেসব বুথে রাজ্য পুলিশ ছিল, সেখানে পুনর্নির্বাচন করা হোক। এ ছাড়াও সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানান তিনি। এই দাবিতে জেলার পলিটেকনিক কলেজে ধর্না শুরু করেন তিনি। একই দাবি জানায় রাজ্য বিজেপিও। শুক্রবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে মুকুল রায়ের নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধি দল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের অফিসে ধর্নায় বসে যায়। অবশ্য বিজেপির ধর্নায় বসার আগেই নির্বাচন কমিশনের তরফে আরও ২৬ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, প্রথম দফার ভোটে সুষ্ঠু ভোটই হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছেন কমিশনের আধিকারিকরা। ১৮ এপ্রিল রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জ, এই তিন কেন্দ্রে ভোট হবে সে দিন। কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “দ্বিতীয় দফার ভোটেও যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না হয়, তাঁর জন্য যথেষ্ট তৎপর নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন দলের তরফে বারবার আরও কেন্দ্রীয় বাহিনীর আবেদন জানানো হচ্ছিল। যেহেতু এ বার তিনটি কেন্দ্রে ভোট, তাইজন্যই প্রথমে ২৫ কোম্পানি ও তারপর আরও ২৬ কোম্পানি অর্থাৎ মোট ৫১ কোম্পানি আধাসেনা পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ মোট ১৩৪ কোম্পানি আধাসেনা থাকবে রাজ্য। সুষ্ঠু ভোট করানোর জন্য সবরকম ভাবে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন।”