কর্নাটকে বিদ্রোহের মুখে ইয়েদুরাপ্পা, মোদীর সঙ্গে দেখা করে ছাড়তে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ

গত কয়েকমাস ধরে কর্নাটকের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতার সঙ্গে গোলমাল চলছে মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার। এই পরিস্থিতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা দিতে চাইলেন। তিনি বলেছেন, অসুস্থ হয়ে পড়ার জন্যই তাঁর পক্ষে আর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। ৭৮ বছর বয়সী ইয়েদুরাপ্পার অফিস থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী কর্নাটকের কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। বেঙ্গালুরু রিং রোড প্রজেক্ট ও মেকাদাতু প্রজেক্ট নিয়ে দু’জনের আলোচনা হয়েছে।

শুক্রবার ছেলে বিজয়েন্দ্রর সঙ্গে বিশেষ বিমানে দিল্লিতে যান ইয়েদুরাপ্পা। এদিনও তিনি ইস্তফা দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কর্নাটকে নেতৃত্ব বদল নিয়ে কোনও গুজব ছড়িয়েছে নাকি? আমার তো এমন কিছু জানা নেই। আপনারা কিছু জানেন?”


কর্নাটকে বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে যাঁরা ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন বিজয়পুরা শহরের বিধায়ক বাসনাগৌড়া পাতিল ইয়াতমল, পর্যটনমন্ত্রী সি পি যোগেশ্বর এবং বিধান পরিষদের সদস্য এ এইচ বিশ্বনাথ। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বিজয়েন্দ্র হস্তক্ষেপ করেন।


সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অরুণ সিং ওই রাজ্যে সফর করেন। বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাজ্যে নেতৃত্ব পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। কারণ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করেন, ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বে সরকার ভাল কাজ করছে।

বিশ্বনাথ তখন অরুণ সিংকে বলেন, বিদ্রোহ সামলানোর মতো নৈতিক জোর বা সাহস নেই ইয়েদুরাপ্পার। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ করেন। তাঁর বক্তব্য, ইয়েদুরাপ্পাকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তাঁর বয়স হয়েছে। স্বাস্থ্যও ভাল নেই। এই অবস্থায় তাঁর পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

অরুণ সিংকে সরাসরি বিশ্বনাথ বলেন, ইয়েদুরাপ্পা সরকারের কাজে প্রত্যেক মন্ত্রীই অসন্তুষ্ট হয়েছেন। পরে বিধান পরিষদের সদস্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবসময় বলেন পরিবারতন্ত্র খুব বিপজ্জনক। কিন্তু কর্নাটকে পরিবারতন্ত্রই চলছে। কর্নাটক বিজেপি মোদীজির কথা মনে রাখেনি। মানুষ সরকারের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছেন।”

২০১৯ সালে রাজ্যের জনতা দল সেকুলার ও কংগ্রেসের জোট সরকারের ১৮ জন বিধায়ক দলত্যাগ করে বিজেপির পক্ষে আসেন। তার পরেই বিজেপি সরকার গঠিত হয়। যে বিধায়করা দলত্যাগ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে বিশ্বনাথ অন্যতম। তিনি ছিলেন জেডিএসের বিধায়ক। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী ও তাঁর বাবা এইচ ডি দেবগৌড়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। পরে অবশ্য উপনির্বাচনে তাঁর পরাজয় হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.