ভবানীপুরে উপনির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগেই বিস্ফোরক আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার রাজধানীতে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে এক বৈঠক করেন তিনি। তার পর এ দিন এক বাংলার সংবাদ চ্যানেলের প্রতিনিধির মুখোমুখি হয়েই রিগিংয়ের আশঙ্কা উস্কে দিতে শোনা যায় বালুরঘাটের সাংসদকে। পাশাপাশি যারা ভোট দিতে পারছেন না, তাঁদের ভোট যাতে অন্য কেউ না দিয়ে দেয় সেটা কমিশনকে নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। ভবানীপুরের শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষ যাতে ভোট দেন, সেই বিষয়টি কমিশনকে দেখার অনুরোধ করেছেন সুকান্তবাবু।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুর্সি বাঁচানোর উপনির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সুকান্তকে বলতে শোনা যায়, “শাসক যখন ভয় পায় তখনই গণতন্ত্রে হিংসা জায়গা পায়। গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই। কিন্তু যখন মানুষ ভয় পায় তখনই তারা হিংস্র হয়। তাই ভবানীপুরের হিংসা দেখে আমরা আশাবাদী। যদি ৬০-৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে তবে বিজেপি সেখানে জিতবে। কিন্তু আমরা সন্দেহে রয়েছি। যে ধরনের আক্রমণ হয়েছে, তাতে উচ্চবিত্ত বা সম্পদশালী যে ভোটাররা রয়েছেন, তাঁরা কতটা ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের বহুতল থেকে নীচে নামবেন, সেই নিয়ে আমরা খানিকটা সন্দিহান। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের আরেকটু সক্রিয় হওয়া উচিত। তাঁদের ভোট কেন্দ্রে আনার চেষ্টা করা উচিত।”
কমিশনের উদ্দেশ্যে সুকান্তর আরও আবেদন, “যেহেতু এই কেন্দ্রে বরাবর ভোটের হার কম থেকেছে, তাই দেখা উচিত যে ভোটগুলো যেন অন্য কেউ না দিয়ে দেয়। যদি অন্য কেউ ভোটগুলো দিয়ে দেয়, তবে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকব না, সে সম্ভাবনা আছে। আমাদের কাছে খবর আছে।” অর্থাৎ বিজেপি খুব পরিষ্কারভাবেই আশঙ্কা করছে যে ভবানীপুরের ভোটে রিগিং হতে পারে।
বিজেপি রিগিংয়ের যতই দাবি তুলুক, তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই দাবি রীতিমতো নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। শাসকদলের পরিষদীয় নেতা তাপস রায় বিজেপির অভিযোগ শুনে পালটা কটাক্ষ করেছেন। তাপস এ দিন বলেন, এটা সর্বৈব একটা মিথ্যা কথা। বিজেপি আসলে সত্যি বলতে তো পারে না। গল্প, অসত্য এ সবেতেই অভ্যস্ত। এই সমস্ত কথার কোনও ভিত্তি পর্যন্ত নেই। এই দাবির সপক্ষে যদি কোনও প্রমাণ বিজেপি দেখাতে পারে, তবে জানাক না। ওদের তো জানানোর বহু জায়গা রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও তৃণমূলের ভবানীপুরে এসবের (রিগিং) কোনও দিন দরকার পড়েনি, কোনও দিন পড়বেও না।
তবে বিজেপি ও তৃণমূল মুখে যাই বলুক, দুর্যোগের আবহে দুই দলই ভোটের হার কেমন হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। লাগাতার বর্ষণের জেরে এখনও ভবানীপুরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড প্রায় জলমগ্ন। এই অবস্থায় জল ঠেলে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কত শতাংশ মানুষ নিজের ভোট দিতে আসবেন, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। আবহাওয়া দফতর যদিও পূর্বাভাস দিয়ে জানিয়েছে, আগামিকাল থেকেই পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।