রঞ্জিতে নজিরবিহীন ঘটনা! দল হারতেই অধিনায়কের ঘাড়ে দোষ চাপালেন কোচ, ‘ও-ই হারিয়ে দিল’

মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তিন দিনে ম্যাচ হেরে যায় তামিলনাড়ু। রঞ্জি সেমিফাইনালে এই হার এখনও হজম করতে পারছেন না কোচ সুলক্ষণ কুলকর্নি। ইনিংস এবং ৭০ রানে হেরে কোচ আঙুল তুললেন অধিনায়ক সাই কিশোরের দিকে। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্তই দলকে ডুবিয়েছে বলে মনে করছেন সুলক্ষণ।

গত শনিবার শুরু হয়েছিল রঞ্জি সেমিফাইনাল। সকাল ৯টার সময় টস হয়েছিল। সুলক্ষনের মতে তখনই ম্যাচ হেরে যায় তামিলনাড়ু। পিচে ঘাস ছিল। তার পরেও অধিনায়কের টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত অবাক দলের কোচ। সুলক্ষণ বলেন, “পিচ দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম কী হতে চলেছে। কোয়ার্টার ফাইনালে অন্য উইকেটে খেলা হয়েছিল। সেমিফাইনালে যে পিচে খেলা হচ্ছে সেটা পেসার সহায়ক। জানতাম ম্যাচটা কঠিন হবে। আমাদের ভাল খেলতে হবে। আমি সোজাসাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করি। প্রথম দিন সকাল ৯টার সময় আমরা ম্যাচ হেরে গিয়েছিলাম। আমরা টস জিতেছিলাম। আমি নিজে মুম্বইকর। এই পরিবেশ আমার পরিচিত। আমাদের প্রথমে বল করা উচিত ছিল। কিন্তু অধিনায়কের মত আলাদা ছিল। ওর পরিকল্পনা আলাদা ছিল।”

সাধারণত টস জিতলে কী করা হবে তা কোচ, অধিনায়ক এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যেরা মিলে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সুলক্ষণের কথায় বোঝা যাচ্ছে যে, তামিলনাড়ু দলে মতান্তর ছিল। সুলক্ষণ বলেন, “দিনের শেষে অধিনায়কই শেষ কথা বলে। আমি নিজের মত জানাতে পারি। উইকেট কেমন সেটা বোঝাতে পারি। মুম্বই কী ভাবছে সেটাও বলতে পারি। কিন্তু ১০৬ রানে ৭ উইকেট হারানো মুম্বই যে লড়াই করে ফিরতে পারে, সেটা আমি জানতাম।”

সুলক্ষণ মনে করেন যে, দলই টস জিতবে ওই পিচে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্তই নেবে। তিনি বলেন, “আমি জানতাম টস জিতলে দল বল করবে। কিন্তু টিভিতে বলল আমরা টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে আমি জানি চাপটা ব্যাটারদের মাথায় চলে গেল। ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায় সব সময় ব্যাটারেরা চাপে থাকে। আর প্রথম ওভারেই আন্তর্জাতিক মানের ব্যাটারের উইকেট হারালাম। আমরা ম্যাচটা হারতে শুরু করি। মুম্বইয়ের ১০৬ রানে ৭ উইকেট হারানোর পরেও আমরা জিতব বলে মনে হয়নি।”

সাই কিশোরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও তাঁর উপর সব দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন না সুলক্ষণ। তিনি বলেন, “সাই নিজের মনের কথা শুনেছিল। ও মনে করেছিল সেটাই ঠিক। সত্যি বলতে আমরা তো সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠেছি এই ভাবেই। আগের ম্যাচে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাই তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে যায়। ৬৫ রান করে। সেটাও তো ওর মন বলেছিল বলেই। সেই সিদ্ধান্ত আমাদের ইতিবাচক ফল দেয়। তাই আমি অধিনায়ককে দোষ দিচ্ছি না। গত ৭-৮ বছরে অনেক অধিনায়ক চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা তামিলনাড়ুকে রঞ্জির সেমিফাইনালে তুলতে পারেনি। আমি ইতিবাচক ভাবেই দেখতে চাইছি এই সিদ্ধান্তকে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.