জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় পাকিস্তান। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মুহাম্মদ আসিফ এমনটাই জানিয়েছেন আমেরিকার সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইম্সকে। তিনি জানান, পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে যে কোনও আন্তর্জাতিক তদন্তকে স্বাগত জানাবে পাকিস্তান। তারা ওই তদন্তে যোগ দিতে এবং সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে যোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, ভারত রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং নিজেদের গোয়েন্দা ব্যর্থতা ঢাকতে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমেও সেই সুরেই কথা বলেছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আসিফের সাক্ষাৎকার মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার (স্থানীয় সময়)। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ, ভারত কোনও প্রমাণ বা কোনও তদন্ত ছাড়াই এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে। পাকিস্তান এই সংক্রান্ত যে কোনও আন্তর্জাতিক তদন্তে যোগ দিতে ইচ্ছুক বলেও জানিয়েছেন আসিফ।
পহেলগাঁওয়ের হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন দ্য রেজ়িসট্যান্স ফোর্স (টিআরএফ)। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন হিসাবে এটি পরিচিত। অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে শুধু দু’জন ভারতীয়। বাকি সকলেই ছিলেন পাকিস্তানি। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আসিফ জানান, পাকিস্তানে লশকরের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তানে লশকর নিষ্ক্রিয়। পাক অধিকৃত অঞ্চল থেকে কোনও হামলার পরিকল্পনা বা পরিচালনার শক্তি তাদের নেই। পাকিস্তানে ওদের কোনও সংগঠনই নেই।’’ আসিফ আরও বলেন, ‘‘লশকরের সঙ্গে একসময়ে যুক্ত ছিলেন যাঁরা, তাঁদের যে ক’জন এখনও পাকিস্তানে আছেন, তাঁরা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন। কেউ কেউ গৃহবন্দি হয়ে আছেন। কেউ আছেন জেলে। ওঁরা একেবারেই সক্রিয় নন।’’
পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। ভারত থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে পাকিস্তানিদের। ইসলামাবাদ এর কঠোর বিরোধিতা করে জানিয়েছে, সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসাবেই দেখা হবে। আসিফ বলেন, ‘‘আমরা চাই না যুদ্ধ তীব্র হোক। কারণ যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠলে তা সার্বিক ভাবে এই অঞ্চলের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।’’
পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং এক জন নেপালি নাগরিক। অভিযোগ, পর্যটকদের ধর্মপরিচয় জিজ্ঞাসা করে বেছে বেছে মারা হয়েছে। কাশ্মীরে পর্যটকদের নিশানা করে এই ধরনের হামলা আগে কখনও হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না কেউ।