খাবার নেই, পর্যাপ্ত জলের অভাব! কুয়েত বিমানবন্দরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ভারতীয় যাত্রীরা

কেউ কোনও সাহায্য করছেন না। খাবার নেই, পানীয় জলেও টান। অনুরোধ সত্ত্বেও বিমানবন্দরের বাইরে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ। জানতে চাইলেই বলা হচ্ছে, পর্যাপ্ত ভিসা নেই! কুয়েত বিমানবন্দরে এমনই দুর্বিসহ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন অনেক ভারতীয় যাত্রী। অভিযোগ, ১৩ ঘণ্টার বেশি সময় কেটে গিয়েছে এখনও তাঁরা আটকে বিমানবন্দরে। সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন না কেউই।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মুম্বই থেকে ম্যাঞ্চেস্টারগামী গল্ফ এয়ারলাইন্সের বিমানে ভ্রমণ করছিলেন অনেকে। সেই বিমানে শুধু ভারতীয় নয়, আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ অন্য দেশেরও যাত্রী ছিল। কিন্তু যাত্রাপথে ওই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। অনেকের দাবি, বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে গিয়েছিল। ফলে কুয়েত বিমানবন্দরে ওই বিমানটি জরুরি অবতরণ করে। তার পরই বিপদে পড়েছেন ওই বিমানে থাকা ভারতীয় যাত্রীরা!

বিমান থেকে নামলেও বিমানবন্দরের বাইরে ভারতীয় যাত্রীদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিয়ো ছড়িয়েছে। যেখানে যাত্রীরা তাঁদের নিজেদের দুর্ভোগের কথা বলছেন। সাহায্যের জন্য আর্তিও জানাচ্ছেন অনেকে। যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ভারতীয় যাত্রীদের অভিযোগ, খাবার-জল-সাহায্য ছাড়াই ১৩ ঘণ্টার বেশি সময় তাঁরা বিমানবন্দরে কাটিয়ে ফেলেছেন। আর কত ক্ষণ তাঁদের দুর্ভোগের মধ্যে থাকতে হবে, তা জানেন না।

আরজু সিংহ নামে এক যাত্রী ‘এনডিটিভি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কী ভাবে তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের সঙ্গে পক্ষপাতিত্বও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আরজুর কথায়, ‘‘ভারতীয় বা পাকিস্তানি যাত্রী না হলে বিমানবন্দরের লাউঞ্জে প্রবেশের অধিকার রয়েছে। আমাদের বলা হচ্ছে, যদি আমরা ট্রানজিট ভিসার যোগ্য হই তবেই আমাদের বিমানবন্দরের বাইরে হোটেলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। অনেক বলার পর বিমানবন্দরের লাউঞ্জে প্রবেশ করতে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পর আর কোনও সাহায্য করছেন না। অনেকে বাচ্চা, বয়স্ক রয়েছেন। তাঁদের জন্য কম্বল চাইলেও দিতে চাননি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এমনকি, খাবারও দেওয়া হচ্ছে না।’’

কুয়েতের ভারতীয় দূতাবাসের নজরে এসেছে বিষয়টি। তারা জানিয়েছে, দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। দূতাবাস থেকে একটি দল যাত্রীদের সহায়তা করার জন্য বিমানবন্দরে গিয়েছে। এ ছাড়াও, বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যাত্রীদের আপতত বিমানবন্দরের দু’টি লাউঞ্জে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি যাত্রীদের বিমানবন্দরের হোটেলে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে তাইল্যান্ডের ফুকেটে প্রায় ৮০ ঘণ্টা আটকে ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লিগামী একটি বিমান। তাতে সওয়ার ছিলেন শিশু এবং বৃদ্ধ মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন। ১৬ নভেম্বর রাতে ফুকেট থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল বিমানটির। কর্মীদের তরফে সে সময় জানানো হয়, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বিমানটি ছ’ঘণ্টা দেরিতে উড়বে। যাত্রীদের অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করার পর বিমানে চাপতে বলা হয় তাঁদের। এক ঘণ্টা বিমানের ভিতরে বসে থাকার পর আবার তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হয়। ১৮ নভেম্বর বিমানটি উড়লেও কিছু ক্ষণের মধ্যে আবার অবতরণ করানো হয়। শেষ পর্যন্ত বাতিল হয় এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানের যাত্রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.