জে-১০সি যুদ্ধবিমান, পিএল-৯ ক্ষেপণাস্ত্র, এসকিউ-১৬ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কোন কোন চিনা অস্ত্র ব্যবহার করল পাক সেনা?

ভারতের সঙ্গে সঙ্ঘাতের আবহে আবার প্রকাশ্যে এল পাক সেনার চিন নির্ভরতা। ‘অপারেশন সিঁদুরে’র প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় ভূখণ্ডে হামলার পাশাপাশি প্রতি আক্রমণ থেকে বাঁচতে চিনা যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপরেই নির্ভর করতে হল জেনারেল আসিম মুনিরের বাহিনীকে।

পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিনের মাথায়, গত ৬ মে রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাক পঞ্জাব প্রদেশের ন’টি জঙ্গিডেরায় ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের পরেই প্রতিশোধ নিতে হামলা শুরু করেছিল পাক বাহিনী। মার্কিন এফ-১৬ পাশাপাশি চিনা যুদ্ধবিমান ‘জেএফ-১৭ থান্ডার’ এবং ‘জে১০সি ভিগোরাস ড্রাগন’ ব্যবহার করে তারা। চিনের চেংদু এয়ারক্র্যাফটস ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত চতুর্থ প্রজন্মের ‘মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট’ জেএফ-১৭-র আধুনিকতম সংস্করণ ‘ব্লক-৩’ ভারতে হামলা চালাতে পাক বায়ুসেনা ব্যবহার করেছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট।

এর পাশাপাশি, আকাশের লড়াইয়ে ভারতের রাফালের মোকাবিলায় পাক বাহিনীর আধুনিকতম যুদ্ধবিমান জে-১০সি-ও শামিল হয়েছিল বলে কয়েকটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমও এমন দাবি করেছে। বস্তুত, ভারতীয় বায়ুসেনার রাফালের মোকাবিলার উদ্দেশ্যেই ২০২২ সালে চিন থেকে ওই যুদ্ধবিমান কিনেছিল পাক বায়ুসেনা। অস্ত্র বহন এবং দূরপাল্লার উড়ানের ক্ষমতায় রাফালের তুলনায় পিছিয়ে থাকলেও গতিবেগে এগিয়ে জে-১০সি। রাফাল প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯১২ কিলোমিটার বেগে উড়ে যেতে পারে। জে-১০সি জেট বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৪৯৫ কিলোমিটার।

পাক জে-১০সি যুদ্ধবিমানগুলি মঙ্গলবার রাতে এবং বুধবার ভোরে হামলা চালাতে চিনের তৈরি পিএল-১৫ ‘আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র’ ব্যবহার করেছিল বলে ভারতীয় সেনার দাবি। যদিও ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলিকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। বৃহস্পতিবার ভারতের অন্তত ১৫টি সেনাশিবিরে ড্রোন হামলা চালায় পাক সেনা। সেই হামলাতেও তারা তুরস্কে তৈরি ‘বখতিয়ার টিবি-২’, ‘টিএআই অন্কা’র পাশাপাশি চিনের তৈরি (এবং চিনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় নির্মিত) ‘সিএএসসি সিএইচ-৪ রেনবো’, ‘সিএআইজি উইং লুং-২’-এর মতো ড্রোন তারা ব্যবহার করেছিল বলে সেনা সূত্রের খবর।

অন্য দিকে, পাক ড্রোন হামলার জবাবে বুধবার লাহৌরে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর আঘাত হেনেছিল ভারতীয় সেনা। তা ঠেকাতে চিনের তৈরি এইচকিউ-৯ এবং তার উন্নততর সংস্করণ এইচকিউ-১৬ ব্যবহার করে জেনারেল মুনিরের ‘এয়ার ডিফেন্স কোর’। কিন্তু স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর হলেও ‘আকাশ থেকে ভূমি’ ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে তা কার্যকর হয়নি বলে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল ইক্রামাতুল্লা ভাট্টি একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার রাত থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি)-য় চিনের তৈরি ‘টাইপ ৬৩-১’ ৬০ এমএম মর্টার, ‘কিউএলজ়েড-৮৭’ স্বয়ংক্রিয় গ্রেনেড লঞ্চার ব্যবহার করে অসামরিক জনবসতিতে ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে পাক ফৌজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.