করোনার বিরুদ্ধে সুরাহা দেবে ‘ ল্যান্সেট রেসপিরেটরি মেডিসিন’, দাবি টরেন্টোর গবেষকদের

বিশ্ব থেকে এখনও বিদায় নেয়নি করোনা ভাইরাস। ভ্য়াকসিন আবিষ্কার হলেও সারা পৃথিবীর মানুষ এখনও ভ্যাকসিন পায়নি। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা পদ্ধতিতে নিয়ে নতুন করে আশার কথা শোনালেন টরেন্টোর একদল গবেষক।

এতদিন পর্যন্ত করোনা নিয়ে বয়স্ক মানুষের ঝুঁকির কথা শুনে আসলেও গত ৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় টরেন্টোর লিভার ডিজিজ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, করোনার ভাইরাসের ভ্যাক্সিন সম্পূর্ণ ভাবে বাজারজাত হওয়ার আগে পর্যন্ত হেপাটাইটিস-বি রোগের ওষুধ দিয়ে এই মারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা যেতে পারে।

ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, হেপাটাইটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ‘ল্যান্সেট রেসপিরেটরি মেডিসিন’ (Lancet Respiratory Medicine) করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, এই ওষুধের ব্যবহারে মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই করোনা সংক্রমিত রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে টরেন্টোর গবেষকরা জানিয়েছেন যে, সমীক্ষা চলাকালীন তাঁরা মোট ৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর উপর ‘পেগিনেটারফেরন-ল্যাম্বদা’ (peginterferon-lambda) ওষুধ প্রয়োগ করেছিলেন। এই ওষুধ সাধারণত হেপাটাইটিস-বি এবং হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। যদিও এই ওষুধ ব্যবহারের পর ৭ দিনের মধ্যেই রোগীদের থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মিলেছে।

এছাড়াও সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী করোনা সংক্রমিতদের এই ইঞ্জেকশন ব্যবহারের ফলে মোট ৮০ শতাংশ রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাঁদের শরীরে পরবর্তী সময়ে করোনার জীবাণু লক্ষ্য করা যায়নি।

গবেষণায় আরও জানা গিয়েছে, পেগিনেটারফেরন-ল্যাম্বদা’ (peginterferon-lambda) এই ওষুধের ব্যবহারের মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই রোগীদের অন্যক্রমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি এটি করোনা সংক্রমিত রোগীর শরীরের ভাইরাসের অনুপাতকে হ্রাস করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে।

এই বিষয়ে টরেন্টো রিসার্চ সেন্টারের লিভার বিশেষজ্ঞ তথা এই গবেষণা প্রধান নেতৃত্ব দিয়েছেন যিনি ডঃ জর্ডান ফিল্ড বলেছেন, ” বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যখন আমরা সবাই অদৃশ্য ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়ছি তখন হেপাটাইটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত এই ওষুধ করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অনেকটাই সুরাহা দেবে। এমনকী এই অ্যান্টিবডি চিকিৎসা বিজ্ঞানে যথেষ্ট সংবেদনশীল এবং কার্যকরী ফল দিতে সক্ষম।”

যদিও এই ওষুধ ব্যবহারে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা সেই বিষয়ে ওই গবেষণা পত্রে কোনও কিছু বিস্তারিত জানানো হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.