অপরাজিত থেকে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। ফাইনালে তারা হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেই প্রতিযোগিতায় একটা দলকে হারাতে মরিয়া ছিলেন রোহিত শর্মারা। তবে তার নাম পাকিস্তান নয়। অন্য একটা দলের বিরুদ্ধে বদলা নিতে চেয়েছিল ভারত। এত দিন পর তা ফাঁস করেছেন রোহিত।
ভারতের প্রাক্তন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক রোহিত একটা সাক্ষাৎকারে সেই বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তার আগের বছর ভারতের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিলেন রোহিতেরা। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বদলা নিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। রোহিত বলেন, “১৯ নভেম্বর এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করেছিল। তাই আমরাও ওদের একটা উপহার দিতে চেয়েছিলাম। আমাদের আলোচনা হত ওদের কী ভাবে হারাব। আমাদের মাথায় শুধুই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ ছিল। আমরা জানতাম, অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিতে পারি আমরা। সেটাই করেছিলাম।”
২০২৩ সালে ভারতের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপে ফাইনাল পর্যন্ত টানা ১০টা ম্যাচ জিতেছিল ভারত। ফাইনালেও তাদের উপর সকলে বাজি ধরেছিল। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয় ভারতকে। পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার ৮-এ অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল। তাই ভারতের কাছে হারলে বিদায় নিত তারা। সেই ম্যাচে রোহিত ৯২ রান করেন। ভারতের রান তাড়া করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। হেরে বিদায় নিতে হয় তাদের। শেষ পর্যন্ত বদলা নিয়েছিলেন রোহিতেরা।
বিশ্বকাপ এলেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তা হয়েছিল। নিউ ইয়র্কের মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। রোহিতেরা অবশ্য সেই ম্যাচকে আলাদা করে দেখেননি। একটা ম্যাচ হিসাবেই দেখেছিলেন। রোহিত বলেন, “পাকিস্তান আমাদের কাছে শুধুমাত্র এক প্রতিপক্ষ। ওদের হারালে আমাদের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে সুবিধা হত। তার বাইরে কিছু নয়। তাই আমার খুব বেশি ভাবতে চাইনি। পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিততে না পারলে কি সকলে আনন্দ পেত? পেত না। আমরা বিশ্বকাপ জেতার কথা ভেবে নেমেছিলাম। শুধু পাকিস্তানকে হারাতে নয়।”
বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে নিউ ইয়র্কে একটা স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছিল। ভারত তাদের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ সেখানেই খেলেছিল। নিউ ইয়র্কের সেই স্টেডিয়ামে খেলারা অভিজ্ঞতা নিয়েও মুখ খুলেছেন রোহিত। তিনি বলেন, “দেখে ভালই লাগছিল। কিন্তু ম্যাচের আগে সেখানে অনুশীলন করতে পারিনি। আমরা তিনটে ম্যাচ ওখানে খেলেছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি, কত রান করলে ওখানে জেতা সম্ভব। কোথায় শট খেলা যায়, কী ভাবে রান করা যায়, কোথায় বল ফেললে উইকেট তোলা যায়, কিছুই বুঝতে পারিনি। তবে বোলারেরা ওখানে সুবিধা পাচ্ছিল। সেটা আমাদের কাজে লেগেছে।”
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ১১৯ রান করেছিল ভারত। তার পরেও ৬ রানে জেতে তারা। রোহিত জানিয়েছেন, সেই ম্যাচ ঋষভ পন্থ খুব গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান ম্যাচে ঋষভ ৪২ রান করেছিল। ওই ইনিংসের গুরুত্ব ৭০ রানের মতো। ১১৯ রান করেও আমরা আশাবাদী ছিলাম। কারণ, আমার হাতে বুমরাহ ও অর্শদীপ ছিল। ওরা দুর্দান্ত বল করেছিল। ওই ম্যাচ থেকে যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম তা আগামী দিনে কাজে লেগেছে।”
অধিনায়ক হিসাবে সেটাই রোহিতের প্রথম আইসিসি ট্রফি। ফাইনাল জিতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। পরের বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও জিতেছেন রোহিত। গত মাসে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন রোহিত। এখন শুধু ভারতের হয়ে এক দিনের ক্রিকেট খেলতে চান তিনি।