নিট-পিজি কেন স্থগিত হল? প্রশ্ন কি ফাঁস হয়েছিল এই পরীক্ষারও? আগের দিনের বিজ্ঞপ্তিতেই লুকিয়ে ইঙ্গিত

স্নাতকোত্তর স্তরের ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-পিজি স্থগিত হওয়ার নেপথ্যেও কি রয়েছে প্রশ্নফাঁস? রবিবার ওই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তার আগে কি বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল প্রশ্ন? পরীক্ষার প্যানেল বোর্ড এক দিন আগে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তাতেই লুকিয়ে রয়েছে ইঙ্গিত। কারণ, ওই বিজ্ঞপ্তিতে প্রশ্নফাঁস নিয়ে পড়ুয়াদের সতর্ক করা হয়েছিল। অনেকেই মনে করছেন, প্রশ্ন যে ফাঁস হয়ে গিয়েছে, তা বুঝতে পেরেছিলেন কর্তৃপক্ষ। প্রথমে পড়ুয়াদের তা নিয়ে সতর্ক করা হয়। পরের দিনই পরীক্ষা স্থগিত বলে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

রবিবারের পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ডও পেয়ে গিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। শনিবার আচমকা ঘোষণা করা হয়, নিট-পিজি পরীক্ষা রবিবার হচ্ছে না। পরিবর্তে পরীক্ষা কবে হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। দ্রুত পরবর্তী তারিখ জানানো হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে। এই আবহে চর্চায় উঠে এসেছে প্যানেল বোর্ডের শুক্রবারের বিজ্ঞপ্তির প্রসঙ্গ।

কী ছিল ওই বিজ্ঞপ্তিতে?

নিট-পিজির আয়োজক প্যানেল দ্য ন্যাশনাল বোর্ড অফ এগ্‌জ়ামিনেশন ইন মেডিক্যাল সায়েন্সেস শুক্রবার পড়ুয়াদের সতর্ক করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, সমাজমাধ্যমে কেউ বা কারা প্রশ্ন বিক্রি করার নামে পড়ুয়াদের বোকা বানাতে চাইছে। তাঁদের পাতা ফাঁদে যেন কেউ পা না দেন, পড়ুয়াদের সে কথাই জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ।

প্যানেল বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা নিট-পিজির আগে রুটিনমাফিক নজরদারি চালিয়েছিল। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, কিছু মানুষ এই পরীক্ষার প্রশ্নের কথা বলে পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা করার চেষ্টা করছেন। তাঁরা দাবি করছেন, এই পরীক্ষার প্রশ্ন নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে হাতে পেয়ে যেতে পারেন পড়ুয়ারা। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে প্যানেলের তরফে। পড়ুয়ারা যাতে কোনও ভাবেই ওই ফাঁদে পা না দেন, বিজ্ঞপ্তিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কেউ এমন কোনও প্রতারণার প্রমাণ পেলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে তা জানানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের।

এই বিজ্ঞপ্তি জারির এক দিন পরেই জানিয়ে দেওয়া হয়, রবিবার পরীক্ষা হচ্ছে না, তা পরে হবে। পরীক্ষা স্থগিতের কারণ হিসাবে অবশ্য প্রশ্নফাঁসের কথা বলা হয়নি। শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) নিয়ে একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এনটিএ যাতে অবাধ, স্বচ্ছ ভাবে পরীক্ষা নিতে পারে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়ন করার প্রয়োজন। সেই কারণেই পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে স্থগিত হয়েছে সিএসআইআর নেট পরীক্ষাও। তার আগে ইউজিসি নেট পরীক্ষা হয়ে যাওয়া পর তা বাতিল করে দেওয়া হয়। এ বছরের নিট নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.