চাঁদের গভীরে এখন ‘এসেছে শরৎ, হিমের পরশ’ বাইরে গনগনে তাপ, বিক্রম পাঠাল উষ্ণতার গ্রাফ

চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অনেকটাই কাছে রয়েছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। রবিবার ইসরো জানাল, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রা কেমন তাও জানাতে শুরু করেছে বিক্রম। চাঁদের মাটির উপরে এবং নীচে বিভিন্ন গভীরতায় তাপমাত্রার হেরফের হওয়ার একটি গ্রাফ দিয়েছে ইসরো। তাতে দেখা যাচ্ছে, চাঁদের মাটির নীচে মাত্র ২০ মিলিমিটার গভীরে পৌঁছলেই তাপমাত্রা বাংলার শরৎকালের মত। ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে ওঠানামা করে পারদ।

গত বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদের অবতরণ করেছে বিক্রম। তার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই চাঁদের মাটিতে শুরু হয়েছে তার পরীক্ষানিরীক্ষার কাজ। ইতিমধ্যেই বিক্রমের ভিতরে থাকা চন্দ্র অভিযাত্রী যান বা রোভার প্রজ্ঞান গুটি গুটি পায়ে হাঁটছে চাঁদের মাটিতে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮ মিটার পথ অতিক্রম করেছে প্রজ্ঞান। অন্য দিকে, বিক্রমের ভিতরে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রও কাজ শুরু করেছে। এই সব যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম চাস্তে। চাঁদের মাটির গভীরে ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছনোর ক্ষমতা রয়েছে এই যন্ত্রের। একই সঙ্গে চাঁদের মাটির উপরের এবং গভীরের তাপমাত্রাও মাপবে চাস্তে। ইতিমধ্যেই চাঁদের মাটির ৮০ মিলিমিটার গভীরে পৌঁছতে পেরেছে যন্ত্রটি। সেই সঙ্গে রেকর্ড করেছে বিভিন্ন স্তরের তাপমাত্রাও। যার তথ্য বিক্রম পাঠিয়েছে ইসরোর দফতরে। সেই তথ্যই একটি গ্রাফের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে ইসরো। সেই সঙ্গে দাবি করেছে, ‘‘এই প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রার এতটা স্পষ্ট একটি গ্রাফ পাওয়া গেল।’’

চাঁদের তাপমাত্রার গ্রাফ।

কী দেখা যাচ্ছে সেই গ্রাফে? বিক্রম জানিয়েছে, দক্ষিণ মেরুতে দিনের বেলায় চাঁদের পৃষ্ঠে প্রায় ৫০ ডিগ্রির সমান তাপমাত্রা। এই ‘দিন’ অবশ্য পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিনে বিস্তৃত। বিজ্ঞানীদের দেওয়া হিসাব বলছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যোদয় থেক সূর্যাস্ত হতে পৃথিবীর হিসাবে লাগে ১৪ দিন। আবার সূর্য ঢললে রাতও নামে পৃথিবীর হিসাব অনুযায়ী ১৪ দিনের জন্য। চাঁদের কুমেরুতে এই রাত যখন নামে তখন চন্দ্রপৃষ্ঠে মাইনাস ৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত নামে তাপমাত্রা। তবে সূর্য আকাশে থাকলে চন্দ্রপৃষ্ঠের এই অংশের মাত্র ৩০ মিলিমিটার গভীরে গেলেও তাপমাত্রা থাকে ওই ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ঘরেই।

বিক্রমের পাঠানো গ্রাফ অনুযায়ী আরও নীচে অর্থাৎ ৭০ মিলিমিটার গভীরে চাঁদের তাপমাত্রা অবশ্য হিমাঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে। আরও ১০ মিলিমিটার গভীরে গেলে মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড হয় তাপমাত্রা। এই গ্রাফে স্পষ্ট চাঁদের মাটির নীচে খুবদ্রুত নামতে থাকে তাপমাত্রা। মাটির মাত্র চার গাঁট গভীরেই অনেকটা নেমে যায় পারদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.