করোনা আবহে এবছর কালী পুজোয় তমলুকের দেবী বর্গভীমা মন্দিরে কালীপুজোর দিন শোভাযাত্রা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র পুজো দিয়েই কালী পুজো শুরু করবেন তমলুক শহরের কালীপুজোর উদ্যোক্তারা।
তমলুকের শক্তিপীঠ এর প্রাচীন নাম বিভাস। দেবী এখানে বর্গভীমা বা ভীমরূপা নামে অধিষ্ঠিত। ভৈরব সর্বানন্দ মতান্তরে কপালি। মহামায়া সতীর দেহাংশের মধ্যে বামগুল্ফ বা বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এখানে।
১৪৬৬ খ্রিস্টাব্দে মুকুন্দ রামের চন্ডীমঙ্গল কাব্যে গোকুলে গোমতী নামা তাম্রলিপ্তে ‘বর্গভীমা’এবং মার্কণ্ডেয় পুরাণে আছে দেবী বর্গভীমার উল্লেখ।
ঠিক কত বছর আগে এই মন্দিরটি তৈরী হয়েছিল তার সঠিক তারিখ কেউ না বলতে পারলেও কথায় রয়েছে, কুরুক্ষেত্রের ঘটনার সময় এই মন্দিরের স্থাপন।
কথিত আছে যে অর্জুনের অশ্বও থামিয়ে ছিলেন এই তাম্রধ্যয রাজা। যাই হোক আজ থেকে ষাট সত্তর বছর আগেও এই তমলুক এলাকাতে মা বর্গভীমার পুজো ছাড়া আর কোনও দেব দেবীর পুজো হতো না।
এখন পুজো হলেও নিয়ম রয়েছে বাড়ির পুজো হোক বা ক্লাবের, আগে মা বর্গভীমাকে পুজো দিয়ে তবেই অন্য পুজো শুরু হবে।
আজও সেই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন তমলুকের মানুষ। শ্যামা পুজোর দিন এক প্রকার সারা রাত ধরে চলে মায়ের পুজো। তমলুকের বিভিন্ন ক্লাব প্রতিষ্ঠান বা যাদের বাড়ির পুজো সবাই ঘট নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে নাচ গান বাজনার সহকারে মা বর্গভীমা মন্দিরে আসেন, পুজো দেন। এরপর নিজ নিজ এলাকাতে গিয়ে শ্যামা পুজোয় মেতে ওঠেন।
কিন্তু এবছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কোনও ভাবেই শোভাযাত্রা করা যাবে না এমনটাই নির্দেশ জেলা প্রশাসনের। দু চার জন এসে দেবী বর্গভীমার পুজো দিয়ে তবেই শুরু করতে পারবেন কালীপুজোর উদ্যোক্তারা। ফলে বিগত বছরগুলোর মতো এ বছর দেখা যাবে না তমলুক শহরের কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের সেই উন্মাদনা।