কেন ভ্যাট কমাচ্ছে না রাজ্য? জ্বালানি ইস্যুতে এবার পাল্টা রাজ্যের ওপর চাপ বাড়াতে রিপোর্ট কেন্দ্রের।

জ্বালানির জ্বালায় জেরবার দেশবাসী। তার মধ্যেই উত্‍সবের মরশুমে পেট্রোল-ডিজেলে উত্‍পাদন শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। তাতেই চাপ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গসহ একাধিক বিরোধী শাসিত রাজ্যে। কেন্দ্রীয় সরকার তালিকা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ২২টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল কেন্দ্রের শুল্ক কমানোর পর নিজেদের ভ্যাট কমিয়েছে। কিন্তু, এখনও ১৪ রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল সেই পথে এখনও হাঁটেনি। এর মধ্যে রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গনা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, পঞ্জাব সহ ১৪টি রাজ্য। কেন্দ্রের পদক্ষেপকে হাতিয়ার করে সরব বিজেপি। পালটা কটাক্ষ করছে বিরোধীরাও। কংগ্রেস, শিবসেনার অভিযোগ, উপনির্বাচনে হারের পরই ড্যামেজ কন্ট্রোলে পেট্রোল-ডিজেলে উত্‍পাদন শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রের রিপোর্টে চাপে বিরোধীরা। পেট্রোল-ডিজেলে উত্‍পাদন শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। চাপ বাড়ছে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে। ২২ রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ভ্যাট কমিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সহ ১৪ ২২ রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল এখনও চুপ। রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

এই ইস্যুতেই আগামী সোমবার বিধানসভা চত্ত্বরে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা বিজেপি পরিষদীয় দলের।

পেট্রোল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিধানসভা অন্দরে এই প্রথম সরব হতে চলেছে বিজেপি। সেখানে থাকার কথা উপস্থিত থাকার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। আগামী সোমবার সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে বিধানসভায় শোক প্রস্তাব আসার কথা। ফলে তারপরে অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, শোকপ্রস্তাবে কলকাতা ও লাগোয়া জেলার বিধায়করা, উপস্থিত থাকবেন।

বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, বিধানসভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভে অংশগগ্ৰহণ করার কথা দলীয় বিধায়কদের। আর মুলতুবি না-হলে অধিবেশন কক্ষেই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য সরকারের উদাসীনতা নিয়ে সর্ব হবেন পদ্ম শিবিরের বিধায়করা। এতদিন পেট্রো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রকে দুষছিল রাজ্য। কিন্তু দাম কমার পর শাসকদলের গলায় অন্য সুর। শাসকদলের নেতৃত্বের পাল্টা যুক্তি, উপনির্বাচনে হারের পর ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির।

বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। দিলীপ লিখলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোল, ডিজেলের এক্সাইজ় ডিউটি কমানোর ফলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম কমল ৫ টাকা এবং লিটার প্রতি ডিজেলের দাম কমল ১০ টাকা। এবার নিজেদের জনদরদী বলে দাবি করা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের স্বার্থে ভ্যাট কম করা।”

আজ, শুক্রবারই নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণের সময়ে দিলীপ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, “পেট্রোল -ডিজেল নিয়ে এবার আমাদের আন্দোলন করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার যে রাস্তা দেখিয়েছে, মানুষের কষ্ট দূর করার জন্য রাজ্য সরকারের তা সহযোগিতা করা উচিত। তাদের তরফে কিছুটা ত্যাগ করা উচিত। ওরা সব দিক থেকে লাভ নেবে, এদিকে কেন্দ্রের সমালোচনা করবে! মানুষের কষ্টের কোন ভাগ নেবে না তা হয় না, দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে রাজ্য সরকারকেও।” এবার জ্বালানি জ্বালা পৌঁছতে চলেছে বিধানসভা অন্দরেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.