শেষ মুহূর্তে ভবানীপুরে ‘মাস্টারপ্ল্যান’ বিজেপির

হাতে আর মাত্র ৩৬ ঘণ্টা সময়। সবচেয়ে হাইভোল্টেজ উপনির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলা। সাধারণত আর পাঁচটা উপনির্বাচনের তুলনায় এই উপনির্বাচনের গুরুত্ব এবং মাহাত্ম সবদিক থেকেই আলাদা। কারণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজের প্রশাসনিক প্রধানের কুর্সি বাঁচিয়ে রাখার জন্য লড়ছেন। অন্যদিকে, বিজেপিও প্রস্তুতি নিচ্ছে তাঁকে দ্বিতীয়বার ধাক্কা দেওয়ার। পদ্মশিবিরে আপাতত লাস্ট মিনিটের প্রস্তুতি চলছে। মঙ্গলবার অর্জুন সিংয়ের নেতৃত্বে থাকা নির্বাচনী কমিটির এক বৈঠকে বিশদে আলোচনা হয়েছে। ভোটের দিন কী হবে না হবে, কোন পথ ধরে প্রচারের ম্যাপ ঠিক করা হবে, এই সব নিয়ে আলোচনা হয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষও বিশেষভাবে এই আলোচনা পর্বে অংশ নেন।  উপনির্বাচন উপলক্ষে ইতিমধ্যেই প্রতিটি বুথ ভিত্তিক একটি টিম তৈরি করেছে বিজেপি। সেই টিমগুলি কী ভাবে কাজ করবে, শেষ মুহূর্তে তার প্রস্তুতি সেরে নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বুথপ্রতি কতজন করে পোলিং এজেন্ট থাকছে। সেই দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবানীপুরের প্রতিটি বুথে দু’জন করে পোলিং এজেন্টের ব্যবস্থা করছে পদ্মশিবির। একজন থাকবেন ভিতরে, আরেকজন বাইরে। এই এজেন্টদের কী কাজ হবে, সেটা এ দিনের বৈঠকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ভোটাররা গেরুয়া শিবিরেই ভোট দেবেন বলে বিজেপি নিশ্চিত, তাঁদের সঙ্গে সকাল থেকে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। দুই দলের তরফেই চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে সকাল সকাল নিজেদের ভোটারদের ভোট করিয়ে নেওয়া যায়।  বিজেপি কর্মীরা ভোটের সময় যাতে কোনও ধরনের অশান্তির ফাঁদে পা না দেয়, সেই নিয়ে সতর্কও করে রেখেছেন বিজেপি নেতারা। পদ্ম নেতাদের অনুমান, ভোটের দিন বা তার আগে শাসকদলের পক্ষ থেকে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করা হতে পারে। তাই ভোট চলাকালীন যাতে নিয়মিত হেস্টিংসের অফিসে নির্বাচনী দফতরে খবর পাঠানো হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতিতে যাতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়া যায় তার জন্য কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা টিম তৈরি করছে বিজেপি। প্রতি মুহূর্তের আপডেট দিল্লিতে পাঠানোর জন্যও পৃথক টিম তৈরি করে রাখছে গেরুয়া শিবির, এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রে।  ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলায় অবশ্য মঙ্গলবারই হাইকোর্টে স্বস্তি পেয়েছে রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে ভোটে কোনও বাধা নেই। ভবানীপুরের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আইনি জটিলতায় জড়ায় এই প্রক্রিয়া। আদালতে মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই মামলাতেই এদিন এই রায় দেয় আদালত। তবে একই সঙ্গে এদিন আদালত কক্ষে মুখ্যসচিবের ভূমিকা নিয়ে বার বার প্রশ্ন ওঠে। মুখ্যসচিব একজন ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’  হয়েও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সুরক্ষিত করছেন, এমন পর্যবেক্ষণও উঠে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.