তৃণমূলের মিছিলে পা না মেলানোর ‘অপরাধে’ খোয়া গেল ১০০ দিনের কাজ, নাম ধরে ধরে ছাঁটাইয়ের অভিযোগ।

তৃণমূলের ডাকা মিছিলে যোগ দেননি। তাই জব কার্ডের মেলেনি! কাজ থেকে বঞ্চনার অভিযোগে চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের মনসুকা এলাকায়। আর এই ঘটনা ঘিরে জোর রাজনৈতিক তরজা ঘাটালে।

মঙ্গলবার বিকালে চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনে তৃণমূলের রেকর্ড জয়ের পরেই ঘাটালের মনসুকা এলাকায় একটি বিজয় মিছিলের ডাক দেয় তৃণমূল। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাক দেওয়া হয় মিছিলের। তবে সেই মিছিলে যোগ না দেওয়ায় এলাকার প্রায় ৪০ জনকে বাদ দিয়ে দেওয়া হল জব কার্ডের কাজ থেকে। অভিযোগ, বুধবার সকালে তাঁরা যখন এলাকার একশো দিনের কাজে যোগ দিতে যান সেই সময় তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আঙুল উঠেছে জনৈক নিতাই মাজির নামে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।

একশো দিনের কাজ না পাওয়া এক প্রৌঢ়ার কথায়, “মিছিলের কথা বলেছিল। তবে সবাই জানত না। আমাকে বলেছিল। কিন্তু কাজের মধ্যে আর মনে নেই। তার পর আজ করতে যেতে বলে দেওয়া হয় কাজ করতে হবে না। লিস্ট পড়ে পার্টির নেতা নিমাই মাজি বলল, কাজ করতে হবে না। কেন জিজ্ঞেস করতে বলল, “তোমরা কাল মিছিলে আসোনি। তাই কাজ পাবে না। তার পর পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে যাই। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।”

উল্লেখ্য, বন্যা বিধ্বস্ত ঘাটালের মনসুকা এলাকায় দিন কয়েক আগে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। চলছে মাটি কাটার কাজ। কয়েকটা টাকা উপার্জনের জন্য জব কার্ড নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন বহু মানুষ। কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক মিছিলে যোগ দেননি বলে তালিকা তৈরি করে কয়েকজনকে কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

বুধবার সকালের এই ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ঘটনার শাসকদলকে নিশানা করেছেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। তাঁর দাবি শুধু মনসুকা নয়, ঘাটালের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি করার অপরাধে সরকারি সুবিধা থেকে ঠিক এভাবেই বঞ্চিত হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তৃণমূল লোক পাচ্ছে না মিটিং-মিছিলে। বিজেপি সমর্থকরা তাদের মিছিলে যোগ না দিলে ভা তে মারার চেষ্টা হচ্ছে। বিধানসভার অধিবেশনে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলব। কেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষকে এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, জবাব চাওয়া হবে।”

যদিও পাল্টা বিজেপিকে নিশানা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি। তাঁর দাবি, উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর কয়েকজনকে নিয়ে এমন অভিযোগ আনছে গেরুয়া শিবির। ১০০ দিনের কাজে বঞ্চনার অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.