হর হর মহাদেব শ্লোগান দিয়ে মুঘলদের কচু কাটা করেছিল হিন্দুসেনা! ইতিহাসে পড়ানো হয় না লাচিত বরফুকনের বীরত্ব।

লাচিত বরফুকানের  (Lachit Borphukan) নাম শুনেছেন? হ্যাঁ যদি ছোটবেলা থেকে রাজ্যের সরকার দ্বারা পড়ানো ইতিহাস বই পড়ে থাকেন তবে মুঘল রাজাদের নাম ছাড়া কিছু শোনার সুযোগ হবার কথাও নয়। কারণ ভারতের স্কুল কলেজে যে ইতিহাস পোড়ানো হয় তা মেকেলে ও মাক্সমূল্যারের শিক্ষাপদ্ধতি অনুযায়ী। ভারতে যে ইতিহাস পড়ানো হয় তাতে ভারতীয়দের মানসিকভাবে দুর্বল করার এক বিদেশী চক্রান্ত চলে এটা সকলের জানা। যাইহোক দালাল বামপন্থী এবং তথাকথিত সেকুলার ইতিহাসবিদরা মহান হিন্দু যোদ্ধা লাচিত বরফুকানের নাম ইতিহাস পাঠ্য বইয়ের পাতা থেকে মুছে দিয়েছে।

সাধারণ মানুষ লাচিত বরফুকানকে চেনা তো দূরের কথা নাম পর্যন্ত শোনেনি। কিন্তু ভারতীয় সেনা আজও এই মহান হিন্দু যোদ্ধাকে সেলামি প্রদান করে। ভারতীয় সেনার অফিসারদের ট্রেনিং পুনেতে হয়। সেখানে লাচিত বরফুকানের স্ট্যাচু ভারতীয় সেনা লাগিয়ে রেখেছে। ভারতীয় সেনার অফিসারদের যখন ট্রেনিং দেওয়া হয় তখন তাদেরকে লাচিত বরফুকানের বিষয়ে জানানো হয়, যুদ্ধ কৌশল শেখানো হয়। এমন মহান যোদ্ধা যাকে ভারতীয় সেনা নিজেদের ট্রেনিংয়ে সামিল করেছে সেই মহান ব্যাক্তির ইতিহাস দালাল ইতিহাসবিদরা বই থেকে মুছে দিয়েছে।

এই মহান হিন্দু যোদ্ধার জন্ম ২৪ শে নভেম্বর ১৬২২ সালে হয়েছিল। লাচিত বরফুকান মূলত অসমের বাসিন্দা ছিলেন। উনি অসমের হিন্দু অহম সাম্রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন। ১৬৭১ সালে মুঘল কট্টরপন্থীদের সেনা অহম সাম্রাজ্যের উপর হামলা করেছিল এবং সেই সময় সম্রাজ্যের কামান লাচিত বরফুকানের হাতে ছিল। একদিকে ছিল অহম সাম্রাজ্যের ছোট সেনা অন্যদিকে ছিল মুঘলদের বিশাল সেনা। ১৬৭১ সালের এই যুদ্ধ সরাইঘাটের যুদ্ধ হিসেবেও প্রসিদ্ধ। এই যুদ্ধ অসমের তরাই এলাকায় ঘটিত হয়েছিল। মুঘলরা হিন্দু রাজ্যকে শেষ করে সেখানের সম্পত্তি লুটপাট, ও নারীদের শোষণ করার উদ্যেশে হামলা করেছিল।

এই যুদ্ধে কট্টর জিহাদি ওরংজেবের মামা শায়েস্তা খানও ছিল। লাচিত বরফুকানের সেনা প্রথমে যুদ্ধ থেকে পেছনে সরে যাচ্ছিল কারণ মুঘলদের তুলনায় এই সেনা খুবই ছোটো ছিল। অন্যদিকে মুঘলরা গুয়াহাটিতে কব্জাও করে নিয়েছিল। অহম রাজ্যের রাজাও এটা ভাবছিলেন যে উনার হার এবাট নিশ্চিত। কিন্তু তৎপর যুদ্ধের সঞ্চালন লাচিত বরফুকানের হাতে আসে। উনি তার পুরো হিন্দু সেনাবাহিনীর সাথে বার্তালাপ করেন। সৈনিকদের মধ্যে এমন জোশ ঢুকিয়ে দেন যে অহম রাজ্য মুঘলদের সামনে ঝুঁকতে অস্বীকার করে। মাতৃভূমিকে ও মা বোনদের সন্মান রক্ষার জন্য হিন্দু সেনা দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ হয়। তারা বুঝতে পারে যে একবার সাম্রাজ্য মুঘলদের হাতে গেলে কোনো হিন্দু নারীর সম্মান রক্ষা পাবে না।

এরপর যুদ্ধ ঘোষণা হলে সাহসী বীর হিন্দুসেনারা তান্ডব শুরু করে। তান্ডব এমন হয় যে মুঘলদের গাজর, মুলোর মতো কেটে দেয় হিন্দু সেনারা এবং গুয়াহাটিকে মুঘলদের হাত থেকে মুক্ত করে। যুদ্ধ বেশ কিছু দিন ধরে চলেছিল, সেই সময় চারদিকে হর হর মহাদেব এবং জয় বজরংবলী শ্লোগান শোনা যেত। শেষমেষ মুঘল সেনা অসম থেকে পালয়ন করে। লাচিত বরফুকানের মাত্র ৪০০০ সেনা মুঘলদের বিশাল সেনাকে হারিয়ে। এই যুদ্ধের ইতিহাস, যুদ্ধ কৌশল আজও ভারতীয় সেনাকে জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.