মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে কর্ণাটক জুড়ে বিক্ষোভে বিজেপি

কর্ণাটকে জোট সরকারের রাজনৈতিক ভবিষ্যত বিশ বাঁও জলে৷ সেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিজেপি৷ কর্ণাটকে জোট সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে সরকার গড়তে রাজি রয়েছে বিজেপি৷ এ ঘোষণা আগেই করেছিল পদ্ম শিবির৷ মঙ্গলবার জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামীর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিরোধী বিজেপি৷

তাঁদের দাবি ১৪ জন জোট সরকারের বিধায়কের পদত্যাগের ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে কর্ণাটকের কংগ্রেস-জেডিএস সরকার৷ ফলে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই কুমারাস্বামীর৷ দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে মঙ্গলবার দুপুরে জেলার সদর দফতরগুলির সামনে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে একযোগে বিক্ষোভ দেখাবে বিজেপি৷ সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে একথা জানান রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র জি. মধুসূদন৷

এদিকে, জনতা দল-কংগ্রেসের ১১ বিধায়ক শনিবার দুপুরে রাজ্য বিধানসভায় স্পীকার রমেশ কুমারের কাছে উপস্থিত হন ইস্তফা দেওয়ার জন্য৷ এই বিধায়করা হলেন, প্রতাপগৌড়া পাতিল, শিবরাম হেব্বর, রমেশ জারকিহোলি, মহেশ কুমাতি হল্লি, নারায়ণ গৌড়া, রামালিঙ্গা রেড্ডি, সৌম্য রেড্ডি, বাইরাথি সুরেশ এবং মুনিরাথনা এবং জেডি-এস-এর গোপালাইয়াহ্ এবং এইচ বিশ্বনাথ৷

এই ইস্যুতে মধুসূদন জানান, যদি স্পীকার কে আর রমেশ কুমার পদত্যাগে ইচ্ছুক বিধায়কদের ইস্তফা পত্র গ্রহণ করে নেন, তবে কুমারাস্বামীর কাছে পদত্যাগ করা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা থাকবে না৷ সেক্ষেত্রে আস্থা ভোটের মাধ্যমে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিতে হবে জোট সরকারকে, যেখানে বিজেপির জয় নিশ্চিত৷

যে ১১ জন বিধায়ক এদিন ইস্তফা দিতে যান, তার মধ্যে ৮জন কংগ্রেসের ও তিনজন জনতা দল সেকুলারের বিধায়ক বলে খবর৷ যদি এই পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে জোট সরকার৷ ২২৪ আসনের বিধানসভায় ১১৬ আসন রয়েছে জোট সরকারের৷ সরকার ধরে রাখতে গেলে প্রয়োজন ১১৩ জন বিধায়কের৷

ইতিমধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বর ও মন্ত্রী ডিকে শিবকুমার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক তলব করেছেন৷ সেখানে জোট সরকারের সব বিধায়ক ও নেতাদের থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ তবে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে নেই, সেই সঙ্গে অনুপস্থিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দীনেশ গুণ্ডু রাও৷ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরির জন্য বিজেপিকেই দায়ি করা হয়েছে৷

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি৷ তাদের দাবি জোট সরকারের বিধায়কদের ইস্তফার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই৷ তবে সরকার পড়ে গেলে বিজেপি রাজ্য সরকার গঠন করতে ও রাজ্যের হাল ধরতে প্রস্তুত৷ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নিজের ক্ষমতা দেখিয়েছে৷ তাই রাজ্যে বিজেপির পক্ষেই জনাদেশ রয়েছে বলে মনে করছে পদ্মশিবির৷

সিনিয়র বিজেপি নেতা এবং প্রাক্তন কর্ণাটক মুখ্যমন্ত্রী ডিভি সদানন্দ গৌড়া জানান, রাজ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত বিজেপি, এবং বিজেপি সরকার গঠন করলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা৷ এদিকে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই গণ ইস্তফা প্রসঙ্গে সদানন্দ গৌড়া জানান, বিধায়করা দল থেকে বেরিয়ে আসার এবং বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার এটাই সঠিক সময় বলে মনে করেছেন এবং তা রাজ্যের পক্ষে ঠিক হবে না বলেও তাঁরা মনে করেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.