পাঁচ বছরের কন্যাকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা ‘দেনার দায়ে জর্জরিত’ বাবার! রায়গঞ্জে চাঞ্চল্য

নিজের পাঁচ বছরের কন্যাকে প্রথমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করেন। তার পর আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন রায়গঞ্জের এক ব্যক্তি। কিন্তু ঘটনাস্থলে তাঁর পুত্র এসে পড়ায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে অচৈতন্য অবস্থায় এক পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে আনা হয়। চিকিৎসকরেরা তাকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর সন্দেহে রায়গঞ্জ থানায় খবর দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রায়গঞ্জ থানার আইসি এবং অন্যান্য পুলিশকর্মীরা। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।

নাবালিকার বাড়ি এবং তার আশপাশ এলাকায় খোঁজখবর শুরু করেন তদন্তকারীরা। সংগ্রহ করা হয় এলাকার সিসি ক্যামেরা ফুটেজও। পুলিশ জানিয়েছে ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুপুরে শিশুকন্যাটিকে নিয়ে নিজের অফিস ঘরে ঢোকেন তার বাবা। কিছু ক্ষণ পর অচৈতন্য অবস্থায় তাকে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তার পর হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক তদন্তের পরেই ওই শিশুকন্যার বাবাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করেন তদন্তকারীরা।

পুলিশি জেরায় শিশুকন্যাকে খুনের কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত। তিনি আরও জানান, বাজারে তাঁর অনেক দেনা হয়ে গিয়েছিল। দেনার দায়ে জর্জরিত হয়েই নিজের কন্যাকে খুন করে পরে আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই মতো মঙ্গলবার দুপুরে নিজের অফিসঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে প্রথমে নিজের পাঁচ বছরের কন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। কিন্তু আচমকাই ঘটনাস্থলে তাঁর পুত্র এসে পড়ায় আত্মঘাতী হতে পারেননি। শিশুকন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে যান তাঁরা। মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।

রায়গঞ্জের অতিরিক্ত কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার প্রাথমিক প্রামাণ্য নথি এবং অভিযুক্তের জবানবন্দির ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। বুধবার অভিযুক্তকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে হাজির করানো হবে। দেনার কথা বললেও তা কতটা সঙ্গত, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্ততকারীরা। খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কি না তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.