বিজেপির বিক্ষোভের মুখে কেন হেসে কুটিপাটি বীরভূমের তারকা প্রার্থী শতাব্দী? জানালেন নিজেই

প্রচারে বেরিয়ে বিক্ষোভের মুখে আগেও পড়েছেন। কখনও মেজাজ হারিয়েছেন, আবার কখনও ঠান্ডা মাথায় ‘ডিল’ করেছেন। তারকা অভিনেত্রী শতাব্দীকে রাজনীতি অনেক কিছুই শিখিয়েছে। কিন্তু এ বার বিক্ষোভের মুখে হেসে গড়িয়ে পড়লেন বীরভূম লোকসভার বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের প্রার্থী শতাব্দী রায়। ঘটনাস্থল মহম্মদবাজারের বাটেরবাঁধ গ্রাম। সেখানে উন্নয়ন হয়নি, এই দাবি তুলে তাঁকে বিজেপির পতাকা দেখান কয়েক জন। বিক্ষোভকারীদের দেখে হেসে কুটিপাটি প্রার্থী।

সকালে মহম্মদবাজার ব্লকের একাধিক গ্রামে প্রচার সারেন শতাব্দী। তিনি রামপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাটেরবাঁধ গ্রামে গেলে সেখানে বিজেপির কয়েক জন কর্মী পদ্ম-পতাকা হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই নাবালক। শতাব্দীর গাড়ি কাছে আসতেই তারা উন্নয়নের স্লোগান তুলে পদ্ম-পতাকা নাড়তে থাকে। যা দেখে হাসি চাপতে পারেননি শতাব্দী। হেসে হেসেই তাদের বলেন, ‘‘ধন্যবাদ। ভাল থেকো সবাই।’’ গাড়ি থামার পর শতাব্দীকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আবার হেসে ফেলেন। বলেন, ‘‘কোথায় বিজেপি? এক জন বয়স্ক লোক পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে। বাকি ১০-১২ বছরের নাবালকদের হাতে পতাকা ধরিয়ে দিয়েছে! হাস্যকর ব্যাপার।’’

প্রসঙ্গত, গ্রামে অনুন্নয়নের অভিযোগ রয়েছে। আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়া নিয়েও গ্রামবাসীদের ক্ষোভ রয়েছে তৃণমূলের কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীদের দাবি, গ্রামে কোনও উন্নয়ন হয়নি। আবাস যোজনার বাড়ি করে দেওয়ার জন্য তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মণ্ডল টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ। তারই প্রেক্ষিতে শতাব্দীকে বিজেপির পতাকা দেখানোর পরিকল্পনা ছিল গ্রামের বিজেপি সমর্থকদের। কিন্তু পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে যারা, তাদের কারও ভোট দেওয়ার মতো বয়সই হয়নি! যা দেখে হেসে ফেলেন প্রার্থী। যদিও অনুন্নয়নের অভিযোগ যে রয়েছে তা ঠারেঠোরে স্বীকার করে নিয়েছেন শতাব্দী। দুর্নীতি নিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকেই জিজ্ঞেস করুন।’’ অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি রাকেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। ওঁদের সংগঠন দুর্বল হয়ে গিয়েছে বলে এ সব করতে হচ্ছে।’’

বিক্ষোভের ছিরি দেখে হেসে ফেলায় তৃণমূলের তারকা প্রার্থীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরের দাবি, গত ১৫ বছর ধরে বীরভূমে কোনও উন্নয়নই হয়নি। তিনি বলছেন, ‘‘উনি যখন যাচ্ছিলেন বিজেপির কয়েক জন কর্মী পতাকা হাতে নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করে উন্নয়ন-উন্নয়ন বলে চেঁচাচ্ছিলেন। উনি ভেবেছেন যে, খুব উন্নয়ন হয়েছে। ওঁকে যে ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছে, সেটাও বোঝেননি! অবস্থা এমনই হয়েছে যে, তৃণমূলের সাংসদই বুঝতে পারছেন না কতটা উন্নয়ন হয়েছে বা হয়নি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.