Madhyamik: মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চূড়ান্ত উদাসীনতা! নম্বর বেড়ে মেধাতালিকার দাবিদার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

 মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উদাসীনতা! মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পাশে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এক বছর আগে তন্ময়ের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৭২ যা বেড়ে দাড়ালো ৬৮৫.৫। যে ছাত্রকে দশম স্থান পেয়েছে বলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ঘোষণা করেছিল তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪।

সোনারপুরের বাসিন্দা তন্ময় পতি নরেন্দ্রপুর সারদা বিদ্যাপীঠের ছাত্র। ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় সে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭০০ নম্বরের মধ্যে ৬৭২ নম্বর পেয়েছিল তন্ময়। কিন্তু মাধ্যমিকে  তার আশানুরূপ ফল না হওয়ার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল সে। তাই পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে স্ক্রুটিনি করার আবেদন জানায়। তন্ময়ের পরীক্ষা দেওয়ার খাতা গুলো ফের একবার সে দেখতে চায় ,তার মনে অনেক প্রশ্ন জেগেছিল যে সে ইতিহাস ,অংক ও বাংলা ভাষায় সে যা নম্বর পেয়েছিল তার থেকে আরও বেশি  নম্বর সে পেতে পারত বলে নিশ্চিত ছিল। কিন্তু কেন সে কম নম্বর পেল তা জানতেই পর্ষদের কাছে  স্ক্রুটিনির আবেদন করে।

মামলাকারী তন্ময় পতির পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানায়, স্ক্রুটিনির আবেদন করতেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ শুধুমাত্র  ইতিহাসে ৫ নম্বর বাড়িয়ে দেয়। তার ফলে ৬৭২ থেকে তখন তার প্রাপ্ত নম্বর বেড়ে হয় ৬৭৭। কিন্তু বাংলা ও অংক বিষয়ে স্ক্রুটিনির রেজাল্ট অপরিবর্তিত রাখে। মাধ্যমিকের ছাত্র তন্ময় দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় এক থেকে দশম  স্থানে র মধ্যে থাকবে । তাই বাংলা ও অংকের উত্তরপত্রের কপি দেখতে চেয়ে সে আবেদন জানায় পর্ষদের কাছে। ৭ আগস্ট ২০২৩ সালে উত্তরপত্র হাতে পেয়ে তন্ময় দেখতে পায়। তার বাংলায় সঠিক উত্তরের সাড়ে ৬ নম্বর দেওয়াই হয়নি বলে অভিযোগ। এবং অংকেও ২ নম্বর কম দেওয়া হয়েছে।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অসতর্কতার কারণে তন্ময় মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। বোর্ডের নির্দেশ মতো সে এই নম্বর পাওয়ার জন্য আবেদন জানায় গত ১৪ আগস্ট ২০২৩ সালে। সে সম্পূর্ণ নম্বর পেলে তার সমস্ত প্রাপ্ত নম্বর হবে ৬৮৫.৫, অথচ যে ২০২৩ সালে দশম স্থান পেয়েছিল তার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৪। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আজ পর্যন্ত তার জবাবের কোনও উত্তর দেয়নি। অথচ সারা রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সে দশম স্থানে থাকা সত্ত্বেও তাকে সরকারিভাবে কোনও স্থান (Rank) দেওয়া হয়নি। সরকারি তরফ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যারা শীর্ষস্থান পেয়েছিল তাদের বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়েছে অথচ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উদাসীনতার কারণে একজন মেধাবী ছাত্র তার যোগ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণেই সে নিরুপায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলার শুনানিতে তন্ময় পতির প্রাপ্ত নম্বর দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। আইনজীবী আশীষ বাবুর কাছে জানতে চান তন্ময় কোন স্কুলের ছাত্র। এবং কেন নাম্বার কাউন্ট হয়নি তার জন্য বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে যাতে তন্ময়ের আবেদন মঞ্জুর করা হয় এবং তার প্রাপ্ত নম্বর দেওয়া হয়, এই মর্মে নির্দেশ দেন বিচারপতি। তন্ময়ের প্রাপ্ত নম্বর পাওয়ার পরে তাকে বিশেষভাবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভর্ধনা দেওয়া হয় কিনা তার প্রতীক্ষায় মেধাবী ছাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.