কলকাতায় অতি ভারী বৃষ্টি এবং ঝড় চলবে দু’দিন ধরে! দক্ষিণের আরও দুই জেলায় দুর্যোগ নিয়ে সতর্কতা জারি

সাগরের উপর তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। শনিবার সকালে তা পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। তার জেরেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সঙ্গে ঝড়। রবিবার দুই ২৪ পরগনায় অতি ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ১০০-১১০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে ঝড়। দুই জেলায় লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। রবিবার কলকাতায় ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ের সম্ভাবনা। সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি সাত জেলায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। শনিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। শনিবার দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সাত থেকে ১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে সেখানে। সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। রবিবার গোটা দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দুই ২৪ পরগনায় লাল সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। সেখানে ঝড়ের সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়ায় জারি রয়েছে কমলা সতর্কতা। ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রবিবার দক্ষিণের বাকি জেলাতেও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। পূর্ব বর্ধমানে ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়।

আগামী সোমবারও দুই ২৪ পরগনায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রবিবারের থেকে ঝড়ের গতিবেগ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার ওই দুই জেলায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদেও সোমবার জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গতিতে বইতে পারে ঝড়। সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণের বাকি জেলায় জারি হলুদ সতর্কতা। সেখানেও ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। ২৭ মে, সোমবার সকাল পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করেছে হাওয়া অফিস। যাঁরা সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদের ফিরে আসতে বলা হয়েছে।

শুক্রবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য এবং সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে যে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছিল, তা নিম্নচাপে পরিণত হয়ে গিয়েছে এবং গত ১২ ঘণ্টায় আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়েছে। এই মুহূর্তে নিম্নচাপের অবস্থান মধ্য বঙ্গোপসাগরে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় এই নিম্নচাপ আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে এবং শনিবার সকালের মধ্যে তা ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার নাম হবে ‘রেমাল’। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে। আরও উত্তরে অগ্রসর হয়ে রবিবার মধ্যরাতে তা আছড়ে পড়তে পারে স্থলভাগে। বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের উপকূলে সর্বশক্তি নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। স্থলভাগে ঢোকার সময় তা প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসাবেই থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.