প্রতারণা চক্র! রাশিয়ায় চাকরি দেওয়ার নাম করে চার ভারতীয়কে যুদ্ধ করতে পাঠানো হল ইউক্রেনে

চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা নতুন নয়। কিন্তু এ বার চাকরির নামে চার জনকে রাশিয়ার বেসরকারি ওয়াগনার বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করতে ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। চার জনই ভারতীয়। তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনা হোক, আর্জি চার জনের।

চার যুবকের মধ্যে এক জন তেলঙ্গানার বাসিন্দা। নাম মহম্মদ সুফিয়ান। বয়স ২২ বছর। বাকি তিন জন কর্নাটকের কালবুর্গির বাসিন্দা। সুফিয়ান নিজের বাড়িতে একটি ভিডিয়ো পাঠিয়েছেন। তাতে বলেছেন, ‘‘দয়া করে আমাদের বাঁচান। আমরা হাই-টেক জালিয়াতির শিকার।’’ ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সুফিয়ান সেনার উর্দি পরে রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, জোর করে রাশিয়ার হয়ে তাঁদের যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তাঁদের রাশিয়া পাঠানো হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেনার নিরাপত্তা সহায়ক হিসাবে কাজ করবেন তাঁরা। যদিও তা হয়নি বলে অভিযোগ।

চাকরির ‘এজেন্ট’-এর সঙ্গে দুবাইতে প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল চার জনের। সেখানে তাঁদের মোটা বেতনের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে তাঁরা দুবাই থেকে দেশে ফিরে আসেন। এর পর ডিসেম্বরে তাঁদের রাশিয়া পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চেন্নাই থেকে রাশিয়ার বিমান ধরেন তাঁরা। ভিজিটরস ভিসায় পাঠানো হয় তাঁদের। ওই চার জন দুবাইতে কাজ করতেন। সেখানে ৩০-৪০ হাজার টাকা বেতন পেতেন মাসে। চাকরির ‘এজেন্ট’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রাশিয়ায় কাজে গিয়ে মাসে দু’লক্ষ টাকা পাবেন তাঁরা।

চার জনের পরিবারের অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন সেই ‘এজেন্ট’। শেষে দেখা গিয়েছে, রাশিয়ায় কাজ দেওয়ার নামে ভাড়াটে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে এই সেনাবাহিনী। সুফিয়ানের ভাই সৈয়দ সলমন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘১৫ দিন আগে ভাই ফোন করেছিলেন। জানিয়েছিলেন ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছেন তাঁরা। তিনি জানিয়েছেন, ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতারণা করা হয়েছে। ভারতে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।’’

অভিযোগ, ওই চার জন ছাড়া আরও ৬০ ভারতীয়কে ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছে। যুদ্ধের জন্য। রুশ ভাষায় লেখা চুক্তিপত্রে সই করানো হয়েছে। মহারাষ্ট্রের এক ব্যক্তি তাঁদের নিয়োগ করে পাঠিয়েছেন। ওই ব্যক্তির একটি ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.