সংখ্যালঘু নেতা, সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে উত্তাল বাংলাদেশের একাংশ। সেই আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই আবহে এ বার বাংলাদেশে গ্রেফতার আরও এক সন্ন্যাসী! এমনই দাবি করলেন ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণ দাস। অভিযোগ, বাংলাদেশের সন্ন্যাসী শ্যাম দাস জেলে চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় বাংলাদেশ পুলিশ।
রাধারমণ সমাজমাধ্যমে শ্যামের গ্রেফতারির কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘চট্টগ্রাম পুলিশ আর এক ব্রহ্মচারী শ্যাম দাসকে গ্রেফতার করেছে। তিনি কি সন্ত্রাসী? নির্দোষদের গ্রেফতারে ইসকন গভীর ভাবে মর্মাহত।’’ চিন্ময়ের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এবং তাঁর দ্রুত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা পথে নেমেছেন। চলছে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ। সেই আবহে শ্যামের গ্রেফতারি নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। যদিও এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার এখনও মুখ খোলেনি।
চিন্ময়ের জামিনের আর্জি খারিজ হয়েছে বাংলাদেশের হাই কোর্টে। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ। কেন এমন অভিযোগ করা হল? চিন্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অক্টোবরে চট্টগ্রামের সমাবেশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে একটি গেরুয়া পতাকা তুলেছিলেন তিনি। তাতে জাতীয় পতাকার ‘অপমান’ হয়েছে বলে অভিযোগ। অক্টোবরের ওই সমাবেশের পর চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন চট্টগ্রামের মহম্মদ ফিরোজ় খান। তিনি বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা। সেখানে তিনি জানান, বাংলাদেশের পতাকার অবমাননা করেছেন চিন্ময়। অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি করে অশান্তি সৃষ্টিই চিন্ময়ের উদ্দেশ্য।
গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের পুলিশ। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম এবং রংপুরে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। পথে নেমেছেন বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা। গত মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যুও হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। চিন্ময়কৃষ্ণকে সঠিক এবং নিরপেক্ষ বিচারপ্রক্রিয়ার সুযোগ দেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ভারত। সেই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের কথাও বলা হয়েছে বিবৃতিতে। ভারতের এই বিবৃতিকে ভাল চোখে দেখছে না ঢাকা। তারা পাল্টা দাবি করেছে, ভারতের বিবৃতি আসলে ‘দ্বিচারিতা’। ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের পাল্টা অভিযোগও করেছে তারা।