তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে জোর বিতর্ক, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের স্কুলে উড়ল জোড়াফুলের পতাকা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উড়ল শাসকদলের পতাকা। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের রানাপাড়া রক্ষাকালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃণমূলের পতাকা তোলার অভিযোগ ওঠে। যা ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বেঁধে। স্কুলের ভিতর কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের পতাকা তোলা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।

বিজেপির মতে, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকেই গোল্লায় পাঠিয়েছে এই সরকার। লকডাউন কাটিয়ে স্কুল খোলার পর সেগুলি সাফাই করতে গিয়ে যে সব জিনিস পাওয়া গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট শাসকদল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে নিজেদের দলীয় কার্যালয় মনে করে। সেক্ষেত্রে দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে স্কুলে দলীয় পতাকা ওড়ানোও তারই অংশ।

এই ঘটনায় বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। একাংশ বলছেন, এমনটা হওয়ার কথা নয়। হয়ে থাকলে অন্যায় হয়েছে। আবার কারও মত, স্কুল বন্ধ থাকায় সেখানে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পতাকা লাগালেও লাগিয়ে থাকতে পারে। তা খতিয়ে দেখা হবে।

রানাপাড়া রক্ষাকালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিত সরেন জানান, শনিবার সকালে স্কুলেরই এক শিক্ষিকা তাঁকে তৃণমূলের পতাকা ওড়ার খবর দেন। ওই শিক্ষিকাকে শুক্রবার রাতেই ফোন করে স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুলে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা লাগানোর বিষয়টি জানিয়েছিলেন বলে দাবি প্রধান শিক্ষকের। শনিবার প্রধান শিক্ষক অমিত সরেন বলেন, গোটা বিষয়টি স্কুল পরিদর্শককে (এসআই) জানানো হবে।

এ বিষয়ে জামালপুর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মেহমুদ খান বলেন, “এটা তো হওয়া কখনওই কাম্য নয়। আমি জানি না এরকম কিছু ঘটেছে কি না। আমি খবর নিয়ে দেখব। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরকম হওয়ার কথা নয়। প্রতিটা বুথেই তো পতাকা উত্তোলন হয়েছে। হতে পারে স্কুলের পাশে কোথাও পতাকা তোলা হয়েছে। সেটা স্কুলেরই জায়গা। স্কুলের ভিতরে পতাকা লাগাবে এমন নির্দেশ আমাদের দল দেয় না, তা মান্যতাও দেবে না।”

অন্যদিকে জামালপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি অলোক মাজির প্রতিক্রিয়া, “এখন তো স্কুল বন্ধ রয়েছে। আমরা বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় দলীয় কর্মসূচি রেখেছি। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে সেখানেও হয়তো কোনও কোনও দলীয় কর্মী কর্মসূচি করছে। কারণ অনেক সময় ফাঁকা জায়গায় স্কুল কলেজের মধ্যে দলীয় কর্মসূচি করি। তবে ওখানে কী হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

গোটা ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন বর্ধমান সদর জেলা বিজেপির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র। মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “এই তৃণমূলের নিজস্ব কোনও আদর্শ নেই। এরা কোনও সরকারি প্রোটোকল মানে না। এ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এরা একেবারেই শেষ করে দিয়েছে। লকডাউনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধের পর স্কুল খোলার আগে তা পরিষ্কার করার সময় দেখা গিয়েছে সেখানে নানা রকম অসামাজিক কাজকর্ম চলত। মদের বোতল থেকে অনেক কিছুই পাওয়া গিয়েছে। আসলে ওরা স্কুলগুলিকে নিজেদের দলীয় কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করেছিল ভোটের আগে। এখন সেই দলীয় কার্যালয় ভেবেই স্কুলে দলীয় পতাকা তুলেছে। এতে আর ভুল কী আছে। ওদের যা দলীয় আদর্শ সেই মতোই কাজ করেছে। এতে অবাক হওয়ারও কিছু নেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.