রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে তৃণমূলের সিদ্ধান্ত জানাতে পারলেন না পার্থ

রাজ্যে চলছে চরম অরাজক অবস্থা। রাজনৈতিক হিংসার প্রাণ হারিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। এর সঙ্গে দোসর হয়েছে শিক্ষকদের আন্দোলন। যা নিয়ে প্রবল প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়েছে রাজ্যবাসী। এই অবস্থায় রাজ্যের প্রধান চার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল কেশরিনাথ ত্রিপাঠী।

বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে রাজভবনে অনুষ্ঠিত হয় সেই বৈঠক। বাম দলের প্রতিনিধি হয়ে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ছিলেন হত শিবিরের প্রতিনিধি হয়ে। বিজেপির হয়ে রাজভবনে গিয়েছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার।

রাজ্যের শাসক তৃণমূলের প্রতিনিধি ছিলেন দলের মহাসচিব এবং রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মন্তব্য জানান। যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের শাসকদলের অবস্থান জানতে পারেননি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। কারণ বৈঠকে দলের অবস্থান জানাতে পারেননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলের সঙ্গে কথা বলার পরেই রাজ্যের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তৃণমূলের অবস্থান জানাবেন বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

বাম প্রতিনিধিদলের সদস্য মহম্মদ সেলিম এই বৈঠকের বিষয়ে বলছেন যে ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে রাজভবনে কোনও সর্বদল বৈঠক হয়নি। এই মুহূর্তে রাজ্যে অরাজক অবস্থা তৈরি হওয়ার কারণে সর্বদল বৈঠক ডাকা হল। আগেই এই সব বিষয় নিয়ে ভাবা উচিত ছিল। রাজ্যে গণতন্ত্র ফিরলেই এই ধরনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম।

রাজ্য এবং কেন্দ্রের শাসকদল দলের লড়াইয়ের দলে বাংলায় অশান্তি ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তাঁর মতে, “কেন্দ্র এবং রাজ্যের দুই শাসক দল বিজেপি এবং তৃণমূল নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে। এখানে কংগ্রেসের কী করার আছে?” দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সোমেন মিত্র।

লোকসভা ভোটের পর থেকেই রাজ্যে এই অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার এবং রাক্যের শাসকদলের হস্তক্ষেপ জরুরী বলে রাজ্যপালের কাছে জাইয়েছেন তিনি।

এই তিন বিরোধী দলের প্রতিনিধি নিজেদের বক্তব্য পেশ করার পরে রাজ্যের শাসকদলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের প্রতিনিধি পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই সময় জানান যে তিনি দলের সঙ্গে কথা বলার পরেই এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবেন। বিষয়ে বিজেপির প্রতিনিধি জয়প্রকাশ মজুমদারের প্রশ্ন- “দলের অবস্থান না জেনে কেন বৈঠকে এলেন পার্থবাবু? দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তো রাজভবনে আসতে পারতেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.