করোনা মোকাবিলা নাকি জলবায়ু পরিবর্তন রুখে দেওয়া? কীসে কতটা গুরুত্ব, দ্বিধাবিভক্ত বিশ্ব

করোনা (Coronavirus) বিপর্যয় মোকাবিলার মতোই কি গুরুত্ব দিয়ে আবহাওয়া বদল রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ? এই প্রশ্নের দ্বিধাবিভক্ত গোটা বিশ্ব। সম্প্রতি এক বিশ্বসমীক্ষায় উঠে এল এমনই তথ্য। জলবায়ু পরিবর্তনকে (Climate Change) কে, কতটা গুরুত্ব দিতে চায়, তা বোঝা গেল স্পষ্টভাবে। তবে একটা বিষয়ে সকলেই একমত, বিশ্ব উষ্ণায়ন বা আবহাওয়া পরিবর্তনের বিপদ নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সকলে।

সম্প্রতি ‘Globescan’ নামে একটি সংস্থা এ নিয়ে জনসমীক্ষা চালিয়েছিল বিশ্বজুড়ে। প্রশাসনিক স্তর থেকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত চলেছে সমীক্ষা। তাতে দেখা গিয়েছে, অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলি করোনার মতোই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আবহাওয়া পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের মোকাবিলা করার পক্ষে। অথচ তুলনায় ধনী দেশগুলি এর বিপদের কথা স্বীকার করে নিলেও পদক্ষেপ গ্রহণে কিছুটা নীরব। উদাহরণ স্বরূপ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ভারত, কেনিয়া, নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলি চায় পরিবেশ বাঁচাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হোক। এর পাশাপাশি ফ্রান্স ও আমেরিকার মানুষজনেরও একই মতামত।

তবে জাপান, সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এনিয়ে নীরব। আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে দ্রুত গুরুত্বের সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়া নিয়ে সেসব দেশে ভোট পড়েছে ৪৫ শতাংশেরও কম। এ থেকেই অনুমান, তুলনায় ধনী দেশগুলো জলবায়ু বদলের গুরুত্ব ততটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ অথবা বুঝতে পারলেও, তা মোকাবিলায় এখনই জরুরি পদক্ষে নেওয়া দরকার বলে মনে করছে না

ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল
মোট ২৭টি দেশের উপর সমীক্ষা চালিয়েছিল ‘Globescan’
। রিপোর্ট বলছে, তাতে ৯০ শতাংশ মানুষই জলবায়ু পরিবর্তনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। ২০১৪ সালেও এ ধরনের একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল সংস্থাটি। তাতে আমেরিকার ৬০ শতাংশ মানুষ এ বিষয়ে চিন্তিত ছিলেন। এবারের সমীক্ষার ফল বলছে, এখন ৮১শতাংশ মার্কিনিই ব্যাপারটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। এর নেপথ্যে অবশ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিবেশ নিয়ে অবহেলনীয় মনোভাবকে দায়ী করছেন তাঁরা। ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগনের বিধ্বংসী আগুন, টেক্সাসে টর্নেডোর দাপটের পরও প্রেসিডেন্ট পরিবেশ রক্ষায় তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ এখনও, এমনটাই অভিযোগ আমেরিকার বাসিন্দাদের। ভারতে এই সংখ্যাটা ৭০ থেকে বেড়ে ৯৩ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ ভারতীয়ই পরিবেশ বাঁচাতে দ্রুত, গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের পক্ষে।


‘Globescan’এর সমীক্ষকরা মনে করছেন, আসলে মহামারীর সংকটকালে এখন অনেকেই প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকার সুফল টের পাচ্ছেন। বুঝতে পারছেন, পরিবেশ না বাঁচালে করোনার ছোবলের চেয়েও বড় বিপদ অবশ্যম্ভাবী, কেউ রুখতে পারবে না। এই বছরটা সেই শিক্ষাই দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.