নিখোঁজ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর ক্যাফে কফি ডে কর্তার দেহ মিলল নেত্রাবতী নদীর জলে

সোমবার বিকেল থেকেই ম্যাঙ্গালোরের নেত্রাবতী নদীতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে পাওয়া গেল ক্যাফে কফি ডে’র মালিক তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণার জামাই ভিজি সিদ্ধার্থের দেহ। দেহ চিহ্নিত করে পরিবারকে জানিয়েছে পুলিশ। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।

ম্যাঙ্গালোরের পুলিশ কমিশনার সন্দীপ পাটিল জানিয়েছেন, “আজ ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ আমরা দেহ পেয়েছি। উল্লালের কাছে নেত্রাবতী নদীর পাড়ে দেহ দেখতে পান স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। তাঁরাই আমাদের খবর দেন। দেহ চিহ্নিত করা হয়েছে। জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে সিদ্ধার্থের। আমরা পরিবারকে খবর দিয়েছি। দেহ ওয়েনলক হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে ময়নাতদন্তের জন্য। আমরা আমাদের তদন্ত জারি রাখব।”

সোমবার ভি জি সিদ্ধার্থ একটি টয়োটা ইনোভা গাড়িতে চড়ে বেঙ্গালুরু থেকে গিয়েছিলেন ২২০ কিলোমিটার দূরে সকলেশপুরে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন বাসবরাজ পাতিল। তিনি তিন বছর ধরে সিদ্ধার্থর কাছে কাজ করছেন। ফেরার পথে সিদ্ধার্থ তাঁকে গাড়ি ঘুরিয়ে ম্যাঙ্গালুরুর দিকে যেতে বলেন। পথে জেপ্পিনা মোগারু নামে এক জায়গায় নেত্রাবতী নদীর ওপরে ব্রিজ পেরোতে হচ্ছিল।

ব্রিজের মাঝামাঝি গাড়ি থামিয়ে সিদ্ধার্থ নেমে যান। ড্রাইভারকে বলেন, ব্রিজের শেষে গিয়ে অপেক্ষা করতে। তখন সন্ধ্যা সাতটা।

বাসবরাজ গাড়ি নিয়ে ব্রিজের শেষে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। সিদ্ধার্থ ফিরছেন না দেখে তিনি ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিল্পপতির ফোন বন্ধ ছিল। তখন তিনি সিদ্ধার্থর ছেলেকে খবর দেন। পুলিশেও ফোন করেন। তারপর থেকেই তাঁর খোঁজ শুরু হয়। পুলিশ খবর পায়, ব্রিজ থেকে জলে কাউকে ঝাঁপ দিতে দেখা গেছে। তারপরেই ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয় নদীতে। অবশেষে মিলল তাঁর দেহ।

সিদ্ধার্থর বাড়ি চিকমাগালুর জেলায়। তিনি কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এক মেয়েকে বিয়ে করেন। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তিনি প্রথমে চাকরি করেন মুম্বইয়ের জে এম ফিনান্সিয়াল লিমিটেডে। পরে বেঙ্গালুরুতে নিজের কোম্পানি খোলেন, তার নাম সিভান সিকিউরিটিজ। তার সঙ্গে শুরু করেন ক্যাফে কফি ডে। চিকমাগালুরে যে কফি উৎপন্ন হয়, তাকে তিনি বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয় করে তোলেন।

একটি সূত্রে খবর নিখোঁজ হওয়ার আগে ক্যাফে কফি ডে-র ম্যানেজমেন্ট ও কর্মীদের উদ্দেশে চিঠি লিখে গিয়েছেন শিল্পপতি। তাতে বলেছেন, আমি ‘যথাযথ লাভজনক ব্যবসা’ গড়ে তুলতে পারিনি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর অফিসে আয়কর দফতরের অফিসাররা হানা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.