করোনা হামলায় মাঠে নেই অমর একুশে বইমেলা, অনলাইনে জোর

আসন্ন ‘অমর একুশে’ গ্রন্থমেলা কি মাঠ হারাচ্ছে চলতি বছর ? এই প্রশ্ন উসকে উঠল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশের সব থেকে বড় তথা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরিচিত বইমেলা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বাংলা একাডেমি।

বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবার হয়ত ১ ফেব্রুয়ারি বইয়ের স্টল বসিয়ে মেলা করা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই ভাচুয়ালি করার চিন্তা করা হচ্ছে। প্রকাশক, লেখক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এরকমটাই আমরা মনে করছি।

লকডাউন উঠে গিয়ে জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক তবে কোনও বড় জমায়েত ঘিরে সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। এই অবস্থায় প্রতি বছরের মতো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে চলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজন ঘিরে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখনো বড়সড় বাংলাদেশে। ওয়ার্ল্ডোমিটার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেবে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ৪ লক্ষ ৮৫ হাজারের বেশি। মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৯০০ জনের অধিক। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় মৃতের সংখ্যার নিরিখে এই পরিসংখ্যান কমই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, শীতে করোনা হামলার আশঙ্কা বাড়তে পারে। এই কথা মাথায় রেখেই যে কোনও ধর্মীয় বা সাধারণ জমায়েতে জারি আছে নিষেধাজ্ঞা।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রতিদিন বহু মানুষের উপস্থিতি হয়। সেখান থেকে সংক্রমণের বড়সড় সম্ভাবনা।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী জানান, আমরা অফিসিয়ালি কোনও সিদ্ধান্ত এখনও জানাইনি। আমরা আলোচনা করেছি, কোন পরিস্থিতিতে বইমেলা হবে। গতকাল বিকেলে আমরা মিটিং করেছি। সিদ্ধান্ত বি বিজ্ঞপ্তি আকারে জানানো হবে।

১৩৫৮ বঙ্গাব্দের ৮ ফাল্গুন বা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকায় মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন হয়। সেই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ইউনেস্কো প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।

এই ভাষা আন্দোলনের গৌরবজনক ইতিহাসকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এটি ‘একুশে বইমেলা’ নামেও সুপরিচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.