প্রবল তাড়ার সময়ে রাস্তায় সামনের ব্যক্তি ধীরে হাঁটলে রেগে যান? কোন কোন রোগের শিকার হতে পারেন?

অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে, ভিড় মেট্রো বা ট্রেন থেকে নেমে ছুটে রাস্তায় উঠবেন। এ দিকে ছোটার উপায় নেই। এমনকি হাঁটারও অবকাশ নেই। কারণ ঠিক সামনের জনা কয়েক যাত্রীর জীবনে কোনও তাড়া নেই। আর তাঁদের পেরিয়ে যাওয়ারও জায়গা নেই। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই মেজাজ হারাতে শুরু করেন। বিরক্তি বাড়তে থাকে। অধৈর্য হয়ে বার বার তাঁদের অতিক্রম করার চেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা। এই নির্দিষ্ট মনোভাবের একটি নামও রয়েছে ইংরেজিতে। একে বলা হয়, ‘সাইডওয়াক রেজ’।

যখন এই রাগ জাঁকিয়ে বসে, কেউ ভেবে দেখেন না, হয়তো সামনের লোকটি ধীরে হাঁটছেন না, তিনিই দ্রুত হাঁটছেন। কিন্তু সে সময়ে কোনও যুক্তিই মনে ধরে না। আর তখন বিরক্তি সপ্তমে পৌঁছে যায়।

কেন এত রাগ তৈরি হয় ধীরগতির মানুষের পিছনে হাঁটতে?

কোথাও পৌঁছনোর নির্দিষ্ট সময় থাকলে এবং তা পেরিয়ে যেতে থাকলে গতি বাড়াতেই হয়। সে সময়ে সামনে কাউকে ধীরে হাঁটতে দেখলে অধৈর্য হয়ে ওঠে মন। যদি পাশ কাটিয়ে বেরোনো যায়, তা হলে বিরক্তির উদ্রেক হয় না। কিন্তু যদি সেই ব্যক্তির জন্য গতি রোধ হতে থাকে, তা হলে সামনের মানুষটিকেই বাধা বলে মনে হবে। তখন যাবতীয় রাগ সেই লোকটির উপরেই তৈরি হবে। তাড়া না থাকলেও অনেকের ক্ষেত্রে রাগ তৈরি হয়। যখন নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করতে শুরু করেন কেউ কেউ। রাস্তায় হাঁটার সময়ে অনেকের মধ্যেই এই মনোভাব কাজ করে, ‘‘সামনের লোকটি পথ চলতেই জানেন না। নির্দিষ্ট গতি মেনে রাস্তায় চলা উচিত। কিন্তু এ দিক-ও দিক দেখতে দেখতে যাচ্ছেন।’’ অন্যর হাঁটার ধরনে যদি অল্পবিস্তর থমকে যেতে হয়, তা হলেও রাগ হতে পারে।

এতে শরীরে কী প্রভাব পড়ে?

‘জার্নাল অফ ননভার্বাল বিহেভিয়র’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দেখা গিয়েছে, এই রাগের ফলে শরীরে কর্টিসল অর্থাৎ স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। পাশাপাশি, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপের মাত্রাবৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কী ভাবে এই ধরনের রাগ কমানো যেতে পারে?

অধিকাংশ শহুরে যাত্রীরাই এই মনোভাব বদলানোর চেষ্টা করেন না। কারণ তাঁদের মনে হয়, সামনের ব্যক্তিটিরই দোষ। কিন্তু যদি আপনি নিজের মনের শান্তির জন্য, অতিরিক্ত রাগ কমানোর জন্য নিজেকে পাল্টাতে চান তা হলে, মননশীলতা বা মাইন্ডফুলনেস অনুশীলন করতে পারেন। এমন রাগ তৈরি হলেই মনে করবেন, প্রত্যেকেই তাঁদের নিজস্ব সময় মতো কাজ করছেন, হাঁটছেন। কেউই ইচ্ছাকৃত ভাবে আপনার সময় নষ্ট করার জন্য বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.