পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। সেই আবহেই দেশের নদীর জল নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার দিল্লিতে এবিপি নেটওয়ার্ক সামিটে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, ভারতের ইচ্ছাতেই নদীর জল বইবে এবং থামবে। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ চাপানউতর পর্বে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মহল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের সরকার রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে মিলে নদী সংযুক্তিকরণ শুরু করেছে। কেন-বেতোয়া সংযুক্তিকরণ, পার্বতী-কালীসিন্ধ-চম্বল সংযুক্তিরণের কাজ চলছে।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আজকাল তো সংবাদমাধ্যমে জল নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছে।’’ প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলামাত্রই করতালিতে ফেটে পড়ে প্রেক্ষাগৃহ। তার পর সহাস্যে মোদী বলেন, ‘‘আপনারা খুব দ্রুত বিষয়টি বুঝে ফেলেছেন। আগে ভারতের হকের জল বাইরে যেত। কিন্তু এখন ভারতের জল ভারতের কথায় বইবে। ভারতের কথায় থামবে। ভারতের কাজে লাগবে।’’
সিন্ধুচুক্তি স্থগিতের পরেই থেমে থাকা কাজে গতি বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আপাতত উপত্যকা অঞ্চলে মোট পাঁচটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দিকে নজর রয়েছে কেন্দ্রের। ওই প্রকল্পগুলির কাজ এগিয়ে নিয়ে গেলে কাশ্মীরে বিদ্যুতের ঘাটতি অনেকটাই মিটে যাবে বলে অনুমান। সিন্ধু চুক্তির কারণে এই সমস্ত প্রকল্পে কিছু বাধ্যবাধকতা থেকে গিয়েছিল। এখন আর তা মানছে না নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি যখন এমনই তখন জল নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে দিলেন মোদী।
সামিটে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য পেশ করেন এবিপি নেটওয়ার্কের প্রধান সম্পাদক অতিদেব সরকার। মোদীও অতিদেবকে ‘মিত্র’ বলে সম্বোধন করেন। নিজের বক্তৃতায় আগের সরকারের ব্যর্থতা এবং তাঁর সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের নাম না-করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগের সরকার বড় পদক্ষেপ করতে পারত না। চিন্তা করত দুনিয়া কী ভাববে? ভোট পাওয়া যাবে কি যাবে না? কুর্সি থাকবে কি থাকবে না? ভোট ব্যাঙ্ক ধসে যাবে না তো? কিন্তু আমরা সংস্কার করেছি, নানা ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ করেছি।’’ এই প্রসঙ্গেই তিন তালাক প্রথা রদ করার কথা উল্লেখ করেন মোদী। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের সরকারি সিদ্ধান্তও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে অন্যেরা ভারতকে কেবল একটি বাজার হিসাবে দেখত। কিন্তু এখন ভারত প্রতিরক্ষা সামগ্রী তৈরি করে। তে কেনে অন্য দেশ। নিজের জোরে ভারতের কাছে এখন রয়েছে আইএনএস বিক্রান্ত, আইএনএস নীলগিরির মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ।’’