আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর। ন’মাস পর তাঁরা পৃথিবীতে ফিরতে চলেছেন। তাঁদের নিয়ে আসতে আইএসএসে পৌঁছে গিয়েছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মহাকাশযান। অবশেষে ঘড়ি ধরে সুনীতাদের অবতরণের সময় জানাল নাসা। আমেরিকার ফ্লরিডার উপকূলে স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭মিনিটে তাঁরা নামবেন। ভারতের ঘড়িতে ওই সময় বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে।
বুধবার, ১৯ মার্চের আগে যে সুনীতারা ফিরছেন না, তা আগেই জানিয়েছিল নাসা। কিন্তু বুধবার ঠিক কোন সময়ে তাঁদের মহাকাশযান পৃথিবীতে অবতরণ করবে, তা এত দিন স্পষ্ট ছিল না। রবিবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়ে সময় জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এই অবরতরণ প্রক্রিয়া নাসা সরাসরি সম্প্রচার করবে। তা শুরু হয়ে যাবে সোমবার থেকেই।
নাসা জানিয়েছে, সোমবার ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ থেকেই সুনীতাদের অবতরণ প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচার শুরু হয়ে যাবে। নাসার ওয়েবসাইটে এবং সমাজমাধ্যমের পাতায় তা দেখা যাবে। ওই সময়ে তাঁদের মহাকাশযানটির দরজা বন্ধ হবে। শুরু হবে মহাকাশ স্টেশন থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া। তাতেও বেশ খানিকটা সময় লাগবে। ওই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শুরু হবে অবতরণ।
রবিবার সকালে সুনীতাদের ফেরাতে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছিল স্পেসএক্সের ড্র্যাগন যান। তাতে ছিলেন আরও চার নভশ্চর। সুনীতারা তাঁদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ফিরবেন। আগামী কিছু দিনের জন্য মহাকাশ স্টেশন পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে ওই চার মহাকাশচারীর উপর। তাঁরা হলেন নাসার অ্যান ম্যাক্লেন, নিকোল আইয়ার্স, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রতিনিধি কিরিল পেসকভ। এ ছাড়া, সুনীতা এবং বুচের সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরছেন নাসার নিক হগ এবং রুশ নভশ্চর আলেকজ়ান্ডার গর্বুনভ।
রবিবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সহকর্মীদের দায়িত্ব বুঝিয়েছেন সুনীতা-সহ বাকিরা। এখনও সেই প্রক্রিয়াই চলছে। মহাকাশে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না-থাকায় যে কোনও কাজেই তুলনামূলক বেশি সময় লাগছে তাঁদের।
গত বছরের জুন মাসে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা এবং বুচ। আট দিন পরেই তাঁদের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু যে যানে চড়ে তাঁরা গিয়েছিলেন, সেই বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। মহাকাশেই তাঁরা আটকে পড়েন। আট দিনের মহাকাশ সফর ন’মাসে দীর্ঘায়িত হয়। এই সময়ের মধ্যে বার বার নানা কারণে তাঁদের প্রত্যাবর্তন পিছিয়ে গিয়েছে। মহাকাশ থেকে বিভিন্ন সময়ে নানা ভাবে বার্তা দিয়েছেন সুনীতা এবং বুচ। সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন। তাঁদের ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে সারা বিশ্ব।