রবিবার ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড ফাইনাল, কিউয়িদের বিরুদ্ধে লাল বলে হারের বদলা সাদা বলে নেবে রোহিতের ভারত?

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ নিউ জ়িল্যান্ড। লাল বলে ঘরের মাটিতে ০-৩ হারের বদলা সাদা বলে নেওয়ার সুযোগ রোহিত শর্মাদের সামনে। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হারের বদলা গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারিয়ে নিয়েছেন রোহিতেরা। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে গত এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালের বদলাও নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এ বার ঘরের মাঠে নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে ০-৩ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ়ে হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ রোহিতদের সামনে। তা ছাড়া প্রথম টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালেও নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। তাই আগামী রবিবার ফাইনালে নিউ জ়িল্য়ান্ডকে হারাতে পারলে এক সঙ্গে জোড়া হারের বদলা নিতে পারবে ভারতীয় দল।

বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫০ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠলেন মিচেল স্যান্টনারেরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ‘চোকার্স’ তকমা ঘুচল না দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৩৬২ রান করে নিউ জ়িল্যান্ড। জবাবে টেম্বা বাভুমাদের ইনিংস শেষ হয় ৩১২ রানে। নিউ জ়িল্যান্ডের জয়ের কারিগর কেন উইলিয়ামসন এবং রাচিন রবীন্দ্র। দু’জনেই শতরান করলেন লাহোরের ২২ গজে। তাঁদের দাপটের সামনে দাঁড়াতেই পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। কাজে এল না ডেভিড মিলারের শতরান।

বুধবারের সেমিফাইনালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে দলগত সর্বোচ্চ রানের নজির গড়ল নিউ জ়িল্যান্ড। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া লাহোরে করে ৫ উইকেটে ৩৫৬ রান। সেই মাঠেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিউ জ়িল্যান্ড করল ৬ উইকেটে ৩৬২ রান। ভেঙে গেল অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড। যার সামনে দাঁড়াতেই পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন স্যান্টনার। ব্যাটিং সহায়ক পিচের সুবিধা কাজে লাগান নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারেরা। ওপনার উইল ইয়ং ২১ রানে আউট হয়ে গেলেও দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন উইলিয়ামসন এবং রাচিন। তাঁদের জুটিতে ওঠে ১৬৪ রান। ১০১ বলে ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিউয়ি ব্যাটার। ১৩টি চার এবং ১টি ছয় দিয়ে সাজান নিজের ইনিংস। তিনি যত ক্ষণ ক্রিজ়ে ছিলেন, তত ক্ষণ এক দিক ধরে রেখেছিলেন উইলিয়ামসন। পরে তিনিও হাত খোলেন। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ৯৪ বলে ১০২ রানের ইনিংস। ১০টি চার এবং ২টি ছয় মারেন তিনি। পরে দিকে ড্যারেল মিচেল (৩৭ বলে ৪৯), গ্লেন ফিলিপসদের (২৭ বলে অপরাজিত ৪৯) আগ্রাসী ইনিংস সাড়ে তিনশো পার করে দেয় নিউ জ়িল্যান্ডের ইনিংসকে।

দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও বোলারই এ দিন নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারদের আটকাতে পারেননি। ৭২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার লুঙ্গি এনগিডি। ৭০ রানে ২ উইকেট কাগিয়ো রাবাডার। ৪৮ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন উইয়ান মুলডার।

জয়ের জন্য ৩৬৩ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারেরা। ওপেনার রায়ান রিকলটন ১২ বলে ১৭ রান করে আউট হয়ে যান। ২০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক বাভুমা এবং রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। তবে প্রয়োজনের তুলনায় বাভুমার মন্থর ব্যাটিং দক্ষিণ আফ্রিকার ওভার প্রতি রান তোলার লক্ষ্য আরও কঠিন করে দেয়। বাভুমা ৫৬ রান করেন ৭১ বলে। বরং ডুসেন ছিলেন কিছুটা আগ্রাসী। ৬৬ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ১০৫ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাভুমা-ডুসেন জুটি ভাঙার পর প্রোটিয়াদের চার ক্রমশ বেড়েছে। এডেন মার্করাম (২৯ বলে ৩১), হেনরিক ক্লাসেন (৭ বলে ৩), মুলডার (১৩ বলে ৮) পর পর আউট হওয়ায় লড়াই থেকে এক রকম ছিটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৬ ওভারের পর তাদের রান দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২০০। তখনই নিউ জ়িল্যান্ডের ফাইনালে ওঠা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। মিলার ২২ গজে শেষ পর্যন্ত থাকলেও অন্য প্রান্তে সঙ্গীর অভাব বোধ করলেন। শেষ দিকের কোনও ব্যাটারই তাঁকে সাহায্য করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত মিলার ১০টি চার এবং চারটি ছক্কার সাহায্যে ৬৭ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন। রাবাডা ব্যাট হাতে খানিকটা চেষ্টা করলেন বটে। তাতে ম্যাচের ফল বদল সম্ভব ছিল না। তিনি করলেন ২২ বলে ১৬।

স্যান্টনার নিউ জ়িল্যান্ডের সফলতম বোলার। তিনি ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ২৭ রানে ২ উইকেট নিলেন ফিলিপস। ৪৩ রানে ২ উইকেট ম্যাট হেনরির। ২০ রানে ১ উইকেট রাচিনের। ৫৩ রানে ১ উইকেট মিচেল ব্রেসওয়েলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.