পোর্শেকাণ্ডে অভিযুক্তকে বাঁচাতে রক্তের নমুনা বদল! গ্রেফতার খোদ ফরেন্সিক প্রধান-সহ দুই

পুণের পোর্শে দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরকে আড়াল করতে রক্তের নমুনা বদলে দিয়েছেন খোদ ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান! তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসককেও এই অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুণে পুলিশের অপরাধদমন শাখা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পোর্শেকাণ্ডের পর পুণের সসুন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অভিযুক্ত কিশোরকে। সেখানেই তার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। ওই কিশোর নেশা করেছিলেন কি না, তার পরীক্ষা করানো হয়েছিল। সেখানেই নমুনা বদল করা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার পুণে পুলিশের এক সিনিয়র কর্তা ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন, তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, কিশোরের রক্তের নমুনা অন্য কারও সঙ্গে বদলে দেওয়া হয়েছিল। মদ খাননি, এমন এক জনের রক্তের সঙ্গে অভিযুক্তের রক্তের নমুনা বদলে দিয়েছিলেন খোদ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান। এক চিকিৎসকও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। প্রমাণ সংগ্রহ করে তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ১৯ মে দুর্ঘটনার পর অভিযুক্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সকাল ১১টা নাগাদ। সেখানে তার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। ফরেন্সিক বিভাগের রিপোর্টে দেখা যায়, কিশোরের শরীরে মদ খাওয়ার বা নেশা করার কোনও চিহ্ন নেই। কিন্তু এই রিপোর্টে সন্দেহ হয় পুলিশের। দ্বিতীয় বার রক্ত পরীক্ষা করানো হয় অভিযুক্তের। সেই রিপোর্টেই ধরা পড়ে, কিশোর মদ খেয়েছিল। এর পরেই ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করে পুলিশ। সেখান থেকে জানা যায়, প্রথম এবং দ্বিতীয় রিপোর্টটিতে আলাদা আলাদা রক্তের নমুনা ব্যবহৃত হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা যে নমুনা বদলে দিয়েছেন, তখনই পুলিশের কাছে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। এর পর ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

কেন নমুনা বদল করা হল, কেন অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন ফরেন্সিক প্রধান এবং ওই চিকিৎসক, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

গত ১৯ মে পুণেতে একটি পোর্শে গাড়ির ধাক্কায় দু’জনের মৃত্যু হয়। গাড়িটি চালাচ্ছিল ১৭ বছরের কিশোর। সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ। এমনকি, তদন্তে উঠে এসেছে, ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করানো ছিল না আদৌ। ঘাতক গাড়িটিতে কোনও নম্বর প্লেটও ছিল না। পোর্শেকাণ্ডে অভিযুক্ত কিশোরকে প্রথমে ঘটনার ১৫ ঘণ্টার মধ্যেই শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়ে দিয়েছিল আদালত। বুধবার সেই জামিন বাতিল হয়েছে। কিশোরের জামিনের আবেদন খারিজ করে জুভেনাইল আদালত জানিয়েছে, আগামী ৫ জুন পর্যন্ত ওই কিশোরকে জুভেনাইল হোম বা শিশু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.