বাড়িতেও নিরাপদ নন পাকিস্তানের মহিলারা, ৮২% ক্ষেত্রে ধর্ষক বাবা-দাদু! চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

পাকিস্তানের (Pakistan) নাগরিকরা কেউ ভাল নেই। সংখ্যালঘু হোক বা মহিলা – কেউই ভাল নেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রে। সম্প্রতি এমন তথ্যই উঠে এসেছে। পাকিস্তানে মহিলাদের উপর অত্যাচার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উঠে এসেছে কোনও আত্মীয় পরিজনের নাম। পাক মিডিয়ায় এই তথ্য দিয়েছেন সে দেশের এক মহিলা সাংসদ। একটি টিভি অনুষ্ঠানে পাকিস্তানে ধর্ষণের (Rape) হার সম্পর্কে একটি তথ্য প্রকাশ করেন। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৮২ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই অপরাধ করেছেন ধর্ষিতার বাড়ির লোকই। এর মধ্যে রয়েছেন ধর্ষিতার বাবা, ভাই, ঠাকুরদা, কাকা, মায়ের তরফের দাদু, মামা ইত্যাদি। পাকিস্তানের এক টিভি অনুষ্ঠানে এই তথ্য প্রকাশ করেছেন সাংসদ শান্দানা গুলজার খান। তিনি জানিয়েছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা ধর্ষিতার পরিবারেরই কেউ হন। ২০১৮ সালে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন শান্দানা।এদিনের টিভি শোয়ে তিনি বলেন, “পরিবারের লোকের কাছে ধর্ষিতা হওয়ার পর যে মেয়েরা অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েন, তাঁরা পুলিশের কাছে না গিয়ে গর্ভপাত করাতে যান। তাঁদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তাঁদের মায়েরাই। সন্তানকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা উঠলে মায়েরা বলেন যে তাঁরা তাঁদের স্বামীদের ছেড়ে যেতে পারবেন না।” শান্দানা আরও বলেন যে পাকিস্তানে এখনও কেউ এই গুরুতর বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি নয়।এই ঘটনাকে দেশ এবং সমাজের অন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক আখ্যা দিয়েছেন তিনি। গত বছর অক্টোবরের একটি সমীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে পাকিস্তানে প্রতি দু’ঘণ্টায় একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে হত্যার ঘটনাও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশে। পাক টিভি চ্যানেল সামা টিভির তদন্তকারী ইউনিট একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্র দফতর এবং মানবাধিকার মন্ত্রকের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চালানো হয়েছিল সমীক্ষাটি।দেখা যায়, পাকিস্তানে ধর্ষণের ঘটনা বাড়লেও অভিযুক্তের শাস্তির হার খুবই কম। অর্থাৎ এমন একটি গুরুতর অপরাধ করেও ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে অপরাধী। সমীক্ষায় আরও জানা যায়, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল অবধি ২১ হাজার ৯০০ জন মহিলার ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। এর অর্থ দেশজুড়ে প্রতিদিন ১২ জন মহিলার ধর্ষণ হয়। অথবা প্রতি দু’ঘণ্টায় একজন মহিলার ধর্ষণ হয় পাকিস্তানে। সমীক্ষা থেকে আরও জানা গিয়েছে, বাস্তবে আরও অনেক বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেক্ষেত্রে সামাজিক কারণে সেগুলি সামনে আসে না। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.