পাকিস্তানের বারে বারেই আক্রমণের নিশানায় থেকেছে সুফি দরগা। রোজার মাস শুরু হতে ফের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল লাহোরের পঞ্জাব প্রদেশের অতি প্রাচীন দাতা দরবার দরগা। বুধবার সকালে দরগার মূল প্রবেশ দ্বারের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের তথ্য অনুযায়ী, চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জখম অন্তত ১৫। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
লাহোরের একটি টিভি চ্যানেল সূত্রে খবর, দরগার যে অংশের প্রবেশ দ্বার মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত, হামলা চালানো হয় সেখানেই। পঞ্জাব পুলিশের মুখপাত্র নায়াব হায়দারের কথায়, দরগার বাইরেই পুলিশের একটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। নিশানা করা হয়েছিল সেটিকেই। ঘটনায় পুলিশ অফিসার-সহ চার জন পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও অনেক।
লাহোর পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক গাজানফার আলি বলেছেন, ‘‘বিস্ফোরণের সময় দরগার ভিতরে শতাধিক মানুষ ছিলেন। দরগার বাইরে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদেরই মূলত টার্গেট করেছিল দুষ্কৃতীরা। কী ভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে তার তদন্ত চলছে।’’ একই মত পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ কাশিফেরও। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে এটা আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ছিল। তবে তদন্ত চলছে। বিস্ফোরণ স্থল পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ’’
দ্বাদশ শতাব্দীতে তৈরি পঞ্জাব প্রদেশের এই দাতা দরবার দর্গা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় দরগাগুলির মধ্যে একটি। রমজান মাসে প্রায় প্রতিদিনই শতাধিক মানুষের ভিড় হয় এই দরগায়। ২০১০ সালে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে দাতা দরবার দরগায় প্রাণ যায় ৪০ জনের।
কট্টরপন্থী ইসলামি জঙ্গিরা বার বার নিশানা করেছে সুফিদের প্রাচীন দরগাগুলিকে। গত কয়েক বছরে এই ধরনের
হামলায় কয়েকশো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। ২০১৭ সালে সিন্ধুপ্রদেশের সেহওয়ানে সুফি সন্ত লাল শাহবাজ কালান্দরের দরগায় আত্মঘাতী হামলায় মৃত্য়ু হয়েছিল শতাধিক মানুষের। করাচি থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে সেহওয়ানের এই দরগায় সে দিন সুফিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। প্রথমে দরগার গেটে গ্রেনেড হামলা চালায় আত্মঘাতী জঙ্গি, পরে ভিতরে ঢুকে নিজেকে উড়িয়ে দেয়। এই দরগাতেই এর আগে ২০০৫-এ জঙ্গিদের বোমা বিস্ফোরণে ৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। আহত হন প্রায় ১৫০ জন।