জম্মু-কাশ্মীরে দফায় দফায় অভিযান, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৫ জঙ্গি

বুধবার রাত থেকে পুলওয়ামার পুচাল অঞ্চলে শুরু হয়েছে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ। মারা পড়েছে অন্তত দু’জন জঙ্গি। ফাঁদে পড়েছে আরও দু’জন। বৃহস্পতিবার পুলিশ থেকে টুইটারে পোস্ট করে জানানো হয়েছে এই খবর। ওই পোস্টে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কাশ্মীর উপত্যকায় নিহত হয়েছে মোট পাঁচ জঙ্গি।
পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল (কাশ্মীর জোন) বিজয় কুমার বলেন, “কাশ্মীরে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই অভিযানে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সেজন্য পুলিশকে অভিনন্দন জানাই।”
বুধবার রাতে কুলগাম জেলার জদুর অঞ্চলে নিহত হয়েছে দুই জঙ্গি। তারা পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্কর ই তৈবার সদস্য বলে জানা গিয়েছে।
আফগানিস্তানে ফের তালিবানের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাশ্মীরের জঙ্গিরা উন্নত অস্ত্রশস্ত্র পেতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। কারণ মার্কিন সৈন্যের থেকে বিপুল সংখ্যক স্নাইপার রাইফেল, হ্যান্ড হেল্ড রেডার এবং শোল্ডার ফায়ারড মিসাইল কেড়ে নিয়েছে তালিবান। সেই অস্ত্র এবার জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গিদের হাতে আসতে পারে।
কিছুদিন আগেই কাশ্মীরে জৈশ ই মহম্মদ ও লস্কর ই তৈবার জঙ্গিদের কাছে আমেরিকায় নির্মিত এম ফোর রাইফেল পেয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তার ওপরে আফগানিস্তানে যদি জেহাদিরা জয়ী হয়, তাহলে কাশ্মীর বাদে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে, বিশেষত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে জঙ্গিরা তৎপর হয়ে উঠতে পারে।
আফগানিস্তানে তালিবানের উত্থান কীভাবে থামানো যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য রাশিয়া গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে তাঁর কথা হবে। গত ১৬ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা লাভরভ জানাবেন জয়শংকরকে।
এরই মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট করাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। সেজন্য কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে মোদী কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কাশ্মীরের রাজনীতিকরা দাবি করেন, ফের জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। বিধানসভা ভোট হোক তারপরে। প্রধানমন্ত্রী এব্যাপারে কোনও আশ্বাস দেননি। সোমবার জম্মু-কাশ্মীরের বিরোধী দলগুলির জোট ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন’ জানাল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তারা আদৌ খুশি নয়।
গুপকারের মুখপাত্র ইউসুফ তারিগামি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে কোনও লাভ হয়নি।
গত রবিবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুক আবদুল্লার বাড়িতে বৈঠকে বসেন গুপকার জোটের রাজনীতিকরা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে এই প্রথমবার জম্মু-কাশ্মীরের রাজনীতিকরা বৈঠকে বসলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি, সাংসদ হাসনাইন মাসুদি, জাভেদ মুস্তাফা মির এবং মুজফফর আহমেদ শাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.