অনিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠী সংক্রমণ, চন্দনগরের উর্দিবাজারে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন

প্রথমে এই এলাকার দুই ব্যক্তির করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছিল। তারপর তাঁদেরই পড়শি এক তৃণমূল নেতা (Tmc leader)-ও কোভিড-১৯ (covid-19)আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছিল। রবিবার জানা গেল শুধু এই তিনজনই নন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে চন্দননগরের উর্দিবাজার এলাকায়, লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা রোগীর সংখ্য়া পৌঁছে গিয়েছে অন্তত দুই অঙ্কের সংখ্যায়। ব্যাপক গোষ্ঠী সংক্রমণ ভাঁজ ফেলেছে জেলা প্রশাসনের কপালে। এমনটাই দাবি করেছে প্রশাসনের একটি সূত্র।

ওই সূত্রের দাবি, চন্দননগর (Chandannagar)পুর কর্পোরেশনের ১১ ও ১২ নম্বর দুটি ওয়ার্ডে, বিশেষ করে উর্দিবাজার সংলগ্ন কয়েক কিলোমিটার এলাকা, জেলা প্রশাসনের প্রধান মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রথম কোভিড মামলা সামনে আসার পরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার প্রায় ৭০ জন বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছিল। তাদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার ফল অনেকেরই করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে। গত শুক্রবার একসঙ্গে ১৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল বলে সূত্রের দাবি। এরপর শনিবার উর্দিবাজার এলাকারই আরও কিছু বাসিন্দার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

এর আগে হুগলী জেলার শ্রীরামপুর , ডানকুনি, কোন্নগর , রিষড়া, সুগন্ধা-সহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকেই কোভিড-১৯ রোগীর সন্ধান মিলেছিল। কিন্তু, কোথাওই এমন ব্যাপক হারে গোষ্ঠী সংক্রমণ হতে দেখা যায়নি। তাই, প্রশাসনের পক্ষ থেকে চন্দননগরের উর্দিবাজার প্রশাসনের কাছে চিন্তা পাশাপাশি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্তের মোট সংখ্যার বিষযে কোলসা করে কিছু না জানানো হলেও তাঁদের পক্ষ থেকে যে তত্‍পড়তা দেখা যাচ্ছে, তাতে উর্দিবাজার এলাকার অবস্থা যে মোটেই ভালো নয় তা বেশ স্পষ্ট।

প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়ার পরই ওই এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘিরে বিচ্ছিন্ন করেছিল প্রশাসন। শুক্রবার আবার সেই বাঁশের সঙ্গে লাগানো হয় টিনের পাত, যাতে কেউ ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে। কিন্তু শনিবার কিছু অবিবেচক এলাকাবাসী সেই টিন ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। পুলিস এবার ওই জায়গা প্লাইউড দিয়ে মুড়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, নজরদারি জন্য রবিবার সকালে ওই এলাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ এলাকায় ১৫ টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। থানা থেকে সেই ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ড্রোন ক্যামেরার-ও। সঙ্গে বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানিয়ে চলছে লাগাতার মাইকিং। বাজার দোকান খোলার প্রশ্নই ওঠে না।

এদিন সকাল থেকেই চন্দননগরের পুলিস কমিশনার হুমায়ুন কবীর-এর তত্ত্বাবধানে কার্যত পুরো এলাকাটিকেই এইভাবে কোয়ারেন্টাইন করে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে শুধু উর্দিবাজার এলাকার জন্যই প্রায় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসনে। লক্ষ্য একটাই, এই এলাকা থেকে সংক্রমণ যেন কোনওভাবেই জেলার আর কোথাও না ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রামিত এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশদের সুরক্ষিত রাখার জন্য মাস্ক , গ্লাভস ও পিপিই বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.