বুধবারের রাত কেটে গেলেই অপেক্ষার শেষ! কাল বিষ্যুদবার সকাল থেকে লোকসভা ভোটের গণনা শুরু হয়ে যাবে। তার আগে কবিতা লিখে অর্থবহ ইঙ্গিত করতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখলেন, ‘কিছু কথা ছিল..ওটাও জরুরি’। বললেন, খেলা হয়েছে নাকি ভিলেনের মাঠে! এবং এও লিখলেন, ‘গণতন্ত্র গুহায়’
দিদি নিজেই বলেন, দ্রুত কবিতা লিখতে তাঁর জুড়ি নেই। এরই মধ্যে তাঁর লেখা বেশ কিছু কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে। তবে দিদির ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের নেতারা বলছেন, মমতার এ দিনের কবিতায় রোমান্টিসিজম নেই। এ হল প্রতিবাদের কবিতা। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি ব্যবস্থার অপব্যবহার করে যে ভোট হল গোটা দেশে, তা কি সত্যিই নির্বাচন! কাউকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য অনৈতিক ভাবে খেলা চলল দেড় মাস ধরে! এই খেলার মাঠে কি নিরপেক্ষতা রইল? নাকি এটা ভিলেনের মাঠে গিয়ে খেলা? অর্থাৎ দেশে জরুরি অবস্থার মতোই পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ হেন অবস্থায় কাল গণনার সময় দলের নেতাদের সংযত থাকারই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। কোনওরকম আড়ম্বর, আয়োজনেও নিষেধ করেছেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলনেত্রী হয়তো নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তুলতে চাইছেন। এও বলতে চাইছেন, রাজনৈতিক প্রভুর নির্দেশে চলেছে কমিশন। যেখানে নিয়ম নীতি সবই নিজের মতো করে ভাঙা গড়া যায়। তবে এ কথা বলার পাশাপাশি পর্যবেক্ষকদের অনেকেই, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন। গত পরশু এক অনুষ্ঠানে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করেছিলেন প্রণববাবু। এও বলেছিলেন, যারা নাচতে জানে না তারা উঠোন বাঁকা বলে। কিন্তু কমিশন ঠিকঠাক কাজ করেছে।
মমতার এই কবিতা নিয়ে আবার কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি-ও। দলের রাজ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের উপলব্ধির কথাই নিশ্চয় বলতে চেয়েছেন। কী ভাবে বাংলায় গণতন্ত্রকে গুহায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন তিনি। কী ভাবে রাজ্যের নির্বাচন দফতরকে নবান্নের হাতের পুতুলে পরিণত করা হয়েছে। তার পর পঞ্চায়েত ভোটে গায়ের জোরে বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। এমনকী বিরোধী দলের যারা গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছেন, তাদের ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে সামিল করার চেষ্টা হয়েছে। এটা জরুরি অবস্থা ছাড়া আর কী! ভাল যে ওনার বোধোদয় হয়েছে এবং উনি তা স্বীকার করে নিয়েছেন।
একই দিনে মাননীয়ার আরও একটি সাংস্কৃতিক প্রয়াস – এই ভাইরাল ভিডিওটি। রাজনীতির আঙিনায় এ এক ব্যাতিক্রম। কবিতা থেকে ছবি আঁকা – তাঁর অবাধ বিচরণ কারও অজানা নয়। কবিগুরুর অনুপ্রেরণা যেন উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে তাঁর পিয়ানো-রোলে। তবে কি না নিন্দুকের সমালোচনা এড়ানো বড় ভার। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই বলছেন – রোম যখন পুড়ছিলো, তখন সম্রাট নিরো বাজিয়েছিলেন বেহালা। আর বাংলার বেহাল দশায়, উনি বাজান পিয়ানো।