গত ১৫ মার্চ দেশের শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিল, সমস্ত সিনেমা হলে দেখানো যাবে ‘ভবিষ্যতের ভূত’ ছবিটি। তারপর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহের বেশি সময়। রাজ্যের প্রায় কোনও হলই দেখাতে সাহস করছে না বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিল প্রযোজক সংস্থা। সোমবার বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, রাজ্যসরকারকে চিঠি লিখে সমস্ত হলকে জানাতে হবে এই ছবি দেখাতে কোনও আপত্তি নেই। সেই সঙ্গে আদালত এ দিন এও বলেছে, এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সিনেমা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ।
সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছিল অনীক দত্তর ছবি ‘ভবিষ্যতের ভূত’। কিন্তু রিলিজের একদিনের মধ্যেই শহরের প্রায় সব সিঙ্গল স্ক্রিন হল এবং মাল্টিপ্লেক্সে বন্ধ করে দেওয়া হয় ছবির প্রদর্শনী তো কোথাও বলা হয় ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’। কেউ বা বলেন ‘ওপর মহলের নির্দেশ আছে’। তবে কে বা কারা এই ওপর মহল তা অবশ্য জানা যায়নি। এদিকে আগাম টিকিট কেটে ছবি দেখতে আসা দর্শকদের টাকা ফেরত দিয়ে দেয় হল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, অনীক দত্তর এই ছবির প্রদর্শন বন্ধ হওয়ার পরেই ময়দানে নামে ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর প্রযোজনা সংস্থা। প্রথমে তারা লিখিত অভিযোগ জানায় Eastern India Motion Pictures Association (EIMPA)-এর কাছে। প্রযোজক কল্যাণময় চট্টোপাধ্যায় জানান, ৪৪টি হলে ‘ভবিষ্যতের ভূত’ দেখানোর ছাড়পত্র পেয়েছিল ছবির প্রযোজনা সংস্থা Indibility Creative Private Limited (ICPL)। অভিযোগ ছিল, যতগুলো হল পাওয়ার কথা ছিল তার থেকে কম সংখ্যক হল পেয়েছিল ‘ভবিষ্যতের ভূত’। তবে যে যে হলে ছবি দেখানোর অনুমতি ছিল সেই সব হলের মালিকরা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিনেমা প্রদর্শনের জন্য আগাম টাকাও নিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও বন্ধ করে দেওয়া হয় ছবির প্রদর্শন।
এ নিয়ে রাস্তায় নেমেছে নাগরিক সমাজ। কলকাতা, দুর্গাপুর–সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় মিছিল হয়েছে। ছবি দেখাতে না দেওয়াকে ‘ফাসিস্ত প্রবণতা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তাতেও হলে ফেরানো যায়নি ‘ভবিষ্যতের ভূত’কে।
এই ছবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে। গত ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে বলে, হলে প্রদর্শন করতে দিতে হবে ‘ভবিষ্যতের ভূত’। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং পুলিশের ডিজিকে আদালত নির্দেশ দেয়, যাতে কোনও অশান্তি না হয় তা প্রশাসনকেই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু তারপরও হলে না ফেরায় ফের আদালতে আর্জি জানিয়েছিল প্রযোজনা সংস্থা। এ দিন সুপ্রিম কোর্ট সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের চিঠি লেখার নির্দেশ দিয়েছে।