খোলস পাল্টাচ্ছে বিজেপি, নতুনদের ডানা ছাঁটতে নড্ডার কাছে আর্জি দিলীপের

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৭৭-এ আটকে যেতেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল, দলবদলুদের বেশি গুরুত্ব দেওয়ার খেসারত দিতে হল? সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হয় যখন নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা একঝাঁক নেতা ফের একবার তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই ছত্রভঙ্গ হয়েছে দল। এই আবহে দলের হাল হকিকত নিয়ে আলোচনা করতে দিলীপ ঘোষকে দিল্লিতে তলব করেছেন জেপি নড্ডা। আর সেখানেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে দিলীপ ঘোষ আর্জি জানালেন যাতে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নতুনদের হাতে সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তুলে না দেওয়া হয়। দিলীপ সংবাদমাধ্যমকে এই বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই প্রকাশ্যে অনেক কথা বলছেন, যা বলা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে আমি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। এ ধরনের মন্তব্য দলের পুরনো কর্মীদের মনোবলে আঘাত করছে।’

নির্বাচনের সময় ও নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকে রাজ্য বিজেপির একটি সামগ্রিক চিত্র কিন্তু অনেক কথা বলছে। নানা বিষয় নিয়ে দলের অন্দরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আগে বিজেপিতে ঝাঁকে ঝাঁকে তৃণমূল নেতাদের যোগ। যে সে নয়। তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, সোনালী গুহর মতো বহু নাম রয়েছএ তালিকায়। প্রত্যেকের মুখেই শোনা যায় তৃণমূলে থেকে কাজ না করতে পারার সুর। তবে এখন এদের অধিকাংশের মুখে ‘ভুল বুঝে দল বদল’-এর সুর। এই সব বেসুরো নেতাদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে? এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি রয়েছে। কী ব্যবস্থা নেবে, কাদের বিরুদ্ধে নেবে তা দলের উচ্চ নেতৃত্ব ঠিক করবেন।’

মুকুল তৃণমূলে ফিরে আসেন। মুকুলের তৃণমূলে ফিরে আসার পর পরই বিজেপিতে যাওয়া নেতাদের গলায় উলটো সুর শোনা যায়। সোনালি গুহ উপলব্ধি করেন, তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া মস্ত বড় ভুল। এর জন্য মমতার কাছে ক্ষমা চান। ফিরতে চান পুরানো দলে। বেসুরো হতে দেখা যায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রবীর ঘোষালকেও। মুকুলের ঘর ওয়াপসির পরেই কুণাল ঘোষের বাড়িতে যান রাজীব। বঙ্গ বিজেপির বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। কয়েকদিন আগেই সৌমিত্র খাঁ বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। যদিও পরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেন তিনি। সেইসময় সৌমিত্রের গলায় শুভেন্দু, দিলীপদেরকে নিয়ে ক্ষোভ ছিল। পরপর এই সব ঘটনায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে।

এই সামগ্রিক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দিল্লিতে তলব করা হয়। উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার ভরাডুবির পর এই প্রথম দিল্লি সফরে গেলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই তিনি জেপি নড্ডার কাছে অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.