আমাদের জীবন বা সমষ্টিগত সাংস্কৃতিক স্মৃতিতে দেবী সরস্বতীর সঙ্গে তুলনায় আসতে পারেন এমন কেউ আছেন কী? মনে তো হয় না। সেই দেবী যিনি, আমাদেরকে কোনও ক্ষুদ্র, সাময়িক গুরুত্বের বিদ্যার পসরা নয়, বরং নিশ্চিত সৃজনশীলতাই উপহার দেন! বর্তমান সময়ে তিনি যেন, অতীতের থেকে অনেক বেশি, তাঁর সন্তান গা ঝাড়া দিয়ে, অজ্ঞানতিমির থেকে বেরিয়ে আসতে নির্দেশ দিচ্ছেন।
আমার নতুন উপন্যাস “সরস্বতীর প্রজ্ঞা”য় আছে, কিস্কিন্ধাবাসীরা তিনটি অনুষ্ঠান বা পর্ব পালনের মধ্যে দিয়ে নিজেদের জীবনের সার্থকতার পরিমাপ করে। এদের মধ্যে “প্রথম অনুষ্ঠান”টি পালিত হয় জন্মের কিছু মুহূর্ত পরেই। সে-অনুষ্ঠানে দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয় যাতে তাঁর আশীর্বাদে নবজাতক নিজের মায়ের কাছ থেকে পুষ্টি গ্রহণের ক্ষমতা লাভ করে। যেন সে জানতে পারে খাদ্য কীএবং কেমন করে তা আহরণ করতে হয় (এবং এই ট্রিলজি যত সামনের দিকে এগোবে, দেখা যাবে এই শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সভ্যতার কাছে )। “দ্বিতীয় অনুষ্ঠান”-এর মধ্যে দিয়ে সূচিত হয় শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক, অর্থাৎ পোশাকি শিক্ষা। “তৃতীয় অনুষ্ঠান” হল বিবাহ। কিন্তু কোনও “চতুর্থ অনুষ্ঠান” কেন নেই? যুদ্ধ বিগ্রহের পরিসমাপ্তির বহুকাল পর, সবধরনের বিপদের আপাত শান্তির এক মুহূর্তে, বীর হনুমানের মনে পড়ে, তিনি তাঁর মা অঞ্জনাকে এই প্রশ্ন করেছিলেন। তখন অঞ্জনা যে-উত্তর মারুতিকে দিয়েছিলেন, সে-উত্তর অর্থাৎ”চতুর্থ” না থাকার পেছনে তাঁর যে-যুক্তি, তা নিয়ে আমরাও অনেক ভাবব গল্প সেখানে পৌঁছে গেলে। আমরাও তো কিস্কিন্ধাবাসীদের মতোই মা সরস্বতীরই সন্তান!
॥ সরস্বতীর সরল, সাদা (আক্ষরিক অর্থেও) সিধে, মঙ্গলময় উপস্থিতি ॥
আবারও বলি, আমাদের জীবন বা সাংস্কৃতিক স্মৃতিতে দেবী সরস্বতীর তুলনা একমাত্র তিনি নিজেই। আমরা অসংখ্য দেবদেবীকে প্রেম ও ভক্তি দিতে পারি কিন্তু, সরস্বতী বহু দিক দিয়েই সম্পূর্ণ অভিনব। তিনি তর্কসাপেক্ষভাবে একমাত্র দৈবী সত্তা, যাঁকে আমরা স্মরণ করি তাঁর কোনও দু:সাহসিক কাজের জন্য নয়, বরং, তাঁর সরল, অনাড়ম্বর, এবং মঙ্গলময় উপস্থিতির জন্য। হনুমানের কথা ভাবলেই কি তাঁর পাহাড় বহনের কথা বা, নিজ বুক চিরে রাম-সীতাকে দেখানোর কথা, অথবা সূর্যের দিকে সেই বিখ্যাত লম্ফনের কথা মনে পড়ে না? তেমনই, শ্রীকৃষ্ণকে ভাবতে গেলেই অনিবার্য ভাবে মাথায় আসে তাঁর জন্মের সময়কার অতিপ্রাকৃত ঘটনাগুলির কথা, কৈশোরে কালীয়নাগের মাথায় তাঁর নৃত্যের কথা, বা ধর্মক্ষেত্র কুরুক্ষেত্রে অর্জুনকে তাঁর বিরাট স্বরূপ দেখানোর কথা। কিন্তু যখন আমরা বীণাপাণির কথা ভাবি, তখন কিন্তু এমন কোনও বিশেষ ঘটনার কথা আমাদের মনে আসে না। আমরা বরং তখন কেবল ভাবি এমন এক মায়ের কথা যাঁর কাছে চাওয়া যায় এবং পাওয়া যায়। কী? সেই অমূল্য সম্পদ যা আহরণের উদ্দেশ্যেই আমাদের পৃথিবীতে আসা।
॥”খালি-স্লেট” এবং স্মৃতি ॥
আমি আমার শৈশবে, গত সাতের দশকে, অতি সম্প্রতি রবার্তো কালাসোর সংস্পর্শে সামনাসামনি আসার সময়, এমনকী অনন্ত পাই-যুগোত্তর ‘অমর চিত্রকথা’ সিরিজেও, দেবী সরস্বতীকে নিয়ে এমন একটি আখ্যানও খুঁজে পাইনি আজ অবধি। আমাদের সাংস্কৃতিক স্মৃতির মহাসমুদ্রে মেলে না এমন গল্প নেই, কিন্তু আমি এখানে বলতে চাই, আমাদের নিত্যদিনের জীবনে কাহিনিহীন দেবী সরস্বতীর সেই অদ্ভুত সাংস্কৃতিক অবস্থানের কথা। তাঁকে দেখা যেতে পারে সম্পূর্ণ খালি একটি স্লেট বা ফলকরূপে যাঁকে, সময় বা ইতিহাস স্পর্শ করতে পারেনি। আবার, আমাদের হাতে তিনি এক খালি, নিষ্কলুষ স্লেটই কিন্তু অর্পণ করেন: সেই প্রস্তর ফলক যা, তাতে খোদিত বা লিখিত হওয়া প্রতিটি রেখার চাইতে বেশি মূল্যবান। তিনি সাময়িক গুরুত্বের কোনও বিদ্যার থলে আমাদেরকে দেন না। বরং, তাঁর সাধনা আমাদের দিতে পারে অমূল্য প্রজ্ঞা, ঐশ্বরিক সৃজনশীলতা, যাকে পাথেয় করে আমরা অজ্ঞানতিমির থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। তিনি আমাদেরকে সেই সীমাবদ্ধতার থেকে মুক্তি দেন, যে-সীমাবদ্ধতা আমাদের ভাবায় যে, আমরাইতিতমধ্যেই সব জ্ঞান আহরণ করতে সমর্থ হয়েছি এবং আমাদের আর কিছু শেখার নেই। এক কথায় বলতে গেলে, তাঁর দেওয়া সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বরটি হল, বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা।
একথা আমার পক্ষে হলফ করে বলা সম্ভব নয় যে, দেবী সরস্বতীর সঙ্গে শৈশবে আমি কবে প্রথম পরিচিত হলাম এবং দেবদেবীদের মধ্যে তাঁর বিশিষ্টতাকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হলাম। অন্যান্য অনেকের মতোই তিনিও শুধুই আমাদের সঙ্গে ছিলেন; আমাদের অনুভূতিতে, স্বপ্নে, মন্দিরে, ঠাকুরঘরে! তবে হ্যাঁ, আর পাঁচ জনের মতোই, আমি স্পষ্ট করেই মনে করতে পারি তাঁর প্রার্থনার কথা। দশেরা উদযাপনের দিনগুলিতে কেমন করে আমি বাদামি কাগজে মোড়া নোটখাতাগুলোকে তাঁর মূর্তির পাশে রেখে আসতাম, পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়া নিশ্চিত করতে! এবং কেমন করে প্রতিটি পরীক্ষায় বসার আগে “সরস্বতী নমস্তুভ্যাম” উচ্চারণ করে নিতাম!
॥ যাঁরা আমায় সরস্বতীর মহিমার ছায়ায় নিয়ে এলেন॥
যদিও মাদ্রাজে হওয়া আমার অক্ষরভ্যসামু-র (হাতেখড়ি) সময়কার সরস্বতী পুজো সম্পর্কে আমার কোনও স্মৃতিই নেই, আমি কিন্তু সহজেই সেই মানুষগুলিকে মনে করতে পারি যাঁরা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এবং তাঁদের এখন অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি স্মরণ করি, আমার জীবনে হংসবাহিনীর আবাহনকারী রূপে। প্রথাটিকে সম্পাদন করেছিলেন এস কে ডি প্রসাদলিঙ্গম গারু। ইনি বাসিন্দা ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলার তেনালির কাছে চিন্না পারিমি বলে এক ছোট্ট গ্রামের। আমাদের বাড়িতে ইনি পরিচিত ছিলেন মাস্টার গারু নামে। চল্লিশের দশকের গোড়ার দিকে, আমার শিশু-মায়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন মাস্টার গারু।
আমার নিজের বিদ্যালয়ে আমার প্রথম দিনটি কিন্তু ছিল পড়াশুনোর থেকে পলায়নের দিন। এই পলায়ন সম্ভব হয়েছিল মাস্টার গারুর স্ত্রীর সৌজন্যে যিনি, আমার মায়ের ছোটবেলার সঙ্গীত শিক্ষিকা ছিলেন এবং আমার কাছে ছিলেন এক ধরনের পালিকামাতা। ইনি সেদিন ওই বিদ্যালয়ের থেকে আমার পালানোর ব্যবস্থা যেমন করেছিলেন তেমনই, পাশাপাশি, পরবর্তী এক দশক ধরে, অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত এক ধরনের আবেগের খেলার মাধ্যমে এটা সুনিশ্চিত করেছিলেন যে, আমি বিদ্যার্জনের পথে প্রবেশ করব এবং কখনও সেই প্রক্রিয়াকে অবহেলা করব না। আমি স্কুল না যেতে চাইলেই তিনি বলতেন, “পড়াশুনোয় তোমার আশানুরূপ অগ্রগতি যদি না হয় তবে সবাই মাস্টার গারু আর আমাকে দোষারোপ করবে, তার কারণ, তোমার অক্ষরভ্যসামু মাস্টার গারু করেছিলেন।” এতগুলি বছর পরে আজ যখন আমি নিজেই শিক্ষক, আমার মনে হয় এই সব অসাধারণ মানুষকে অতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করাটাই উচিত আমার, সরস্বতীর মহিমার ছায়ায় আমায় নিয়ে আসার জন্য। তাঁদের কথা ভাবলে আমার মনে আমাদের এই সময়ের এক খুব প্রাসঙ্গিক চিন্তার কথাও মনে চলে আসে। বলতে চাইছি যে, এঁদের কাছ থেকে আমি সেটাই পেতাম যেটার থেকে এখনকার ছাত্রেরা দুর্ভাগ্যক্রমে সম্পূর্ণ বঞ্চিত। অর্থাৎ, ঐতিহ্যবাহী, না-শহুরে, ইংরেজি সভ্যতার প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত, বিশুদ্ধ স্বদেশীয় এক ধরণের শিক্ষা। প্রতিটি ভারতীয় প্রজন্মের যে-শিক্ষা পাওয়ার কথা অথচ ঔপনিবেশিক এবং ধর্মীয় আগ্রাসনের চাপিয়ে দেওয়া ছদ্মধর্মনিস্পৃহতার ফাঁদে পড়ে তা আর পায় না। যে-ফাঁদ কার্যকরী হয় বিজাতীয় মানস দ্বারা প্রস্তুত পাঠক্রমের মধ্যে দিয়ে।
যা হোক, আমার কিন্তু অন্ততঃ একটা এমন স্মৃতি আছে যেটাকে আমি নির্দ্বিধায় উপভোগ করি দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদ হিসেবে। স্মৃতিটি হল আমার পিতার সঙ্গে আমার এক কথোপকথনের। সে নয়ের দশকের শেষ দিকের কথা। আমি তখন ভারতে ফিরেছি সম্ভবতঃ বাইরে আমার ডক্টরাল ডিসার্টেশনের জন্য ফিল্ডওয়ার্কের কিছু কাজ সেরে। আমার স্পষ্ট মনে আছে, বাবা লাঞ্চের সময় টেবলের অন্যদিকে বসে আছেন। আমরা কী নিয়ে প্রথম কথা বলছিলাম সেটা আর মনে নেই। কিন্তু যেকোনও কারণেই হোক, হঠাৎ আমার মনে পড়ল ‘সনাতন সারথি’-তে (প্রশান্তি নীলয়ম থেকে প্রকাশিত সত্য সাঁই ওয়ার্লড-এর মুখপত্র ) পড়া এক উপলব্ধির কথা। আমি বাবাকে সে সম্পর্কে আমার নিজের উপলব্ধির কথা বললাম। বললাম, “স্বামী বলছেন ‘সো-হম’, ‘হম-স’ কে উল্টো করে বলাও বটে এবং, সেক্ষেত্রে, আমাদের প্রতিটি শ্বাসই কি বাস্তবে সরস্বতীর বাহন হংস নয়?”
আমার এই মুহূর্তটি বিশেষ ভাবে মনে থাকার কারণ হল আমার পিতার প্রতিক্রিয়া। উনি আমার চিন্তার সৃজনশীলতা ও মৌলিকত্বের প্রমাণ পেয়ে চমৎকৃত হয়েছিলেন এবং আমি ওঁর মুখে বিস্ময় ও মুগ্ধতার ভাষ্য পড়তে পেরেছিলাম। অনেকেই নিজেদের স্নাতক হওয়ার অনুষ্ঠান বা তৎসম্পর্কিত কিছু আলোকচিত্রকে নিজেদের বিদ্যার্জন-যাত্রার স্মারক হিসেবে দেখে। আমার কাছে কিন্তু সেই স্মারক এই স্মৃতিটি। পিতার প্রতিক্রিয়াটি। আজ যখন আমি সেই বয়সে পৌঁছে গেছি যেই বয়সে স্মৃতিরা নিজের অন্তরের গভীরতম অংশে যাত্রার পথে অতি প্রয়োজনীয় মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়, আমি উপলব্ধি করি যে, সেদিন আমার পিতার মুখমণ্ডলে যে অভিব্যক্তি আমি দেখেছিলাম তা সম্ভবতঃ সেই দিনের অভিব্যক্তির চেয়ে ভিন্ন কিছু ছিল না যেদিন তিনি শিশু-আমিকে প্রথম নিজের পায়ে চলা শুরু করতে দেখেছিলেন। পৃথিবীর প্রতিটি গুরুজনের মতোই, উনি সে-মুহূর্তে ওখানে ছিলেন, পৌরোহিত্য করেছিলেন, দেখে পুলকিত হয়েছিলেন যে, পরবর্তী প্রজন্ম যেভাবেই হোক ধর্মের শাশ্বত সত্যকে শিখতে শিখছে।
॥ শেষ পর্যন্ত কি অ-জ্ঞানের সঙ্গে যুদ্ধে জ্ঞানের জয় নিশ্চিত? ॥
বে এরিয়া সত্যনারায়ণ মন্দিরে (“সিলিকন ভ্যালি টেম্পল”) দেবী সরস্বতীর একটি বিশালকায়, স্বর্গোপম সুন্দর প্রতিমা রয়েছে। তাঁর দক্ষিণ কোণেই অবস্থান পবনপুত্র হনুমানের থান। প্রতিবছর মন্দির কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেন এক সর্বজনীন সরস্বতী পুজোর। আমার মনে আছে যেবার আমরা এই পুজোয় যোগ দিতে গিয়েছিলাম, দেখেছিলাম শতাধিক পরিবার কেমন সুশৃঙখল ভাবে সারিবদ্ধ হয়ে পূজা-প্রক্রিয়াকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছেন! কোনও পূর্বপুরুষ কি কখনও কল্পনা করতে পেরেছিলেন, প্রতিটি শিশু সেই এক সহজ অক্ষরগুলি দিয়ে নিজেদের বিদ্যার্জনের যাত্রা শুরু করে যেগুলি দিয়ে এবং যেভাবে তার পিতা মাতা, পিতামহ পিতামহী, এবং তারও আগের পুরুষেরা করে গেছেন। কোনও পূর্বপুরুষ কি কখনও কল্পনা করতে পেরেছিলেন কোথায়, কবে, কেমন করে, কোন দেশে, কীরকম অবস্থার মধ্যে তাঁর উত্তরপুরুষেরা উত্তরাধিকার বহন করে চলবে? শেষ পর্যন্ত কি জ্ঞানেরই জয় হবে তবে? এই গ্রহের এবং তাতে বসবাসকারী প্রতিটি প্রাণে অজ্ঞানকে পরাভূত করে জ্ঞানেরই জয় হবে তো? আমি মানসচক্ষে দিব্যি দেখতে পাই, আমার পিতা মাতা মা সরস্বতীর কাছে প্রার্থনা করছেন যাতে, তাঁর দেওয়া বিদ্যাকে পুঁজি করে আমি একটা ভাল জীবন ও জীবিকা অর্জন করতে সমর্থ হই (সে-যুগে সিংহ ভাগ পিতা মাতার এটাই সবথেকে অগ্রগণ্য চিন্তা ছিল)। কিন্তু, সরস্বতী স্বয়ং যে তার চাইতে অনেক বেশি কিছু আমাদেরকে দিতে চান। তিনি চান, তাঁর সন্তানেরা শুধু ভাল জীবিকা আর জীবনের সন্ধানে কালাতিপাত না করে, জেগে উঠে দেখুক তাদের বৃহত্তর কর্তব্যকে। তাঁর আশীর্বাদ ও সাহায্য নিয়ে ব্রতী হোক এই গ্রহের রক্ষা কার্যে। সেটা উপলব্ধি করতে পারলে আমাদের সন্তানেদের ছোট ছোট হাতে আমরা যে-খড়ি ধরিয়ে দিই সরস্বতী পুজোর সময়, সেগুলি পরিণত হবে দুর্জয় আয়ুধে, যে-আয়ুধ আমাদের সভ্যতা সহ, বিশ্বে যা কিছু শুভ, তাকে রক্ষা করবে।
মা সরস্বতী মেধাদেবী রূপে, শ্রদ্ধাদেবী রূপে, ও বাগদেবী রূপে আমাদেরকে পূর্ণ করুন দৃঢ় সংকল্প, উপযুক্ত চিন্তা, এবং প্রাঞ্জল উপস্থাপনার ক্ষমতা দিয়ে। যাতে করে, আমরা সেই সব করে যেতে পারি এই ধরিত্রীতে, যা যা এক জীবনে করে যাওয়া সম্ভব।
আমি ধন্যবাদ জানাই শ্রী সত্যনারায়ণ স্বামী দেবস্থানম-এর মারেপল্লি নাগ ভেঙ্কট শাস্ত্রী গারুকে দেবী সরস্বতীর বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি-সকলকে আমার কাছে জ্ঞাত করার জন্য।
ভামসি জুলুরি (অনুবাদ : চম্পকদ্যুতি মজুমদার)